খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, খালেদা জিয়ার স্বজনের আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। তবে তা গৃহীত হবে কি হবে না জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। 

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ থানার নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত রেখে করে অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ৮ মার্চ আবেদন করেছেন খালেদা জিয়ার ছো্ট ভাই শামীম এস্কাদার।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী ববলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতাজনিত কারনে আত্মীয়দের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধামন্ত্রী বাসায় অবস্থান করে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। তারও সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে খালেদা জিয়ার আত্মীরা পুনরায় আবেদন করেছেন। 

মন্ত্রী বলেন, গুলিস্তানে বিষ্ফোরণের ঘটনায় এখানো পর্যন্ত নাশকতার কোন আলামত পাওয়া যায় নাই। কোন এক্সক্লুসিভ বিষ্ফোরণ হয়েছে এরকম কোন প্রমাণও আমরা পাই নাই। এখনো তদন্ত কাজ চলছে। তাই এ মূহুর্তে সুনিশ্চিতভাবে কোন কিছু বলা যাচ্ছে না। আমাদের পুলিশ বাহিনীর সাথে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা দুর্ঘটনার কারন উদঘাটনে কাজ করছে। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছি গ্যাস বিষ্ফোরণ থেকেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পরে আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারব কি ঘটেছিল।

স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে রাজারবাগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভাষণ মনে করিয়ে দিয়ে  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, পুলিশ এখন জনগণের বন্ধু এবং বর্তমানে পুলিশ জনগণের কল্যাণে কাজ করছে। পুলিশ জনগণের কল্যাণে কাজ করার পাশাপাশি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন সহ সর্বক্ষেত্রে সক্ষমতা অর্জন করেছে। এ সময়  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদকমুক্ত দেশ করতে  সবাইকে একসাথে কাজ করার আহব্বান জানান।  

তিনি বলেন যে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম, যাদের নিয়ে আমরা গর্ব করি, স্বপ্ন দেখছি। তাদেরকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করতে হবে। মাদক যে ভয়ঙ্কর নেশা, এটা যে একটা সমাজকে, পরিবারকে ধ্বংস করে দেয় এটা মানুষকে বুঝাতে হবে। শুধু কঠোর হলেই মাদক বন্ধ করা যাবে না। মানুষকে বুঝিয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আগামী প্রজন্মকে সুস্থ সবল ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ভিত্তিতে কাজ করছেন। কারন আগামী প্রজন্মের হাত ধরেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিনত হবে। শেখ হাসিনার সততা, একাগ্রতা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কাছে বিএনপির সকল চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে যাবে। আর বাংলাদেশ পৌছে যাবে কাংখিত উন্নত দেশের কাতারে। তাই শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে সকল ভেদাভেদ ও কোন্দল ভুলে আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের এক হয়ে কাজ করে আবারও শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করতে কাজ করার আহবান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু বলেন, বিএনপি জামাত জোটের শাসনামলে দেশে যে পরিমাণ খুন, রাহাজানি, দখলদারিত্ব ও নৈরাজ্যকর অবস্থা ছিল শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর সব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা এখন নতুন নতুন চক্রান্ত ষড়যন্ত শুরু করেছে। তারা জানে না শেখ হাসিনার হাতে থাকলে দেশ আর পিছাবে না বাংলাদেশ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নাহিম রাজ্জাক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটালাইজেশনের হাত ধরে বাংলাদেশ এবার স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে চলছে। এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি নেতারা আজ বিদেশী দোসরদের কাধে ভর করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পায়তারা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তা কখনো হতে দিবে না।

পুলিশ সুপার মো: সাইফুল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, স্বরাষ্ট্র  মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা  বিভাগের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, শরীয়তপুর জেলাপ্রশাসক মো: পারভেজ হাসান, জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে। অন্যান্যদের মধ্যে ভেদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান  আলহাজ্ব হুমায়ুন কবির, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর পরে মন্ত্রী ডামুড্যা ও গোসাইরহাট থানার নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ বিরোধী সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন।

আপন দেশ/এবি