ছবি: সংগৃহীত
টাঙ্গাইলে সংসদ সদস্য তানভীর হাসানের ভাই আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়ার (বড় মনির) বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করা সেই কিশোরী পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। নবজাতককে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাসছে নানা প্রশ্ন।
গর্ভে আসার পর থেকেই ব্রুন নিয়ে চলছিল দাবি-পাল্টা দাবি। এরপর মামলা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা। অবশেষে ছেলে সন্তান প্রসব করলেন মা। এখন পিতৃপরিচায় নিয়ে চলছে নানা কৌশল। সিজারের পর ওই কিশোরী ছিলেন অচেতন। হাসপাতালের খাতায় নবজাতকের বাবার নাম লেখা হয়েছে সৌরভ। কে এই সৌরভ? হাসপাতালের খাতায় কেইবা লিখলেন নবজাতকের বারার নামটি?
এদিকে জ্ঞান ফিরে গর্ভধারিনী মা জানালে নজবাতকের বাবার নাম। তিনি জানতে পারেন সন্তানের বাবার নাম রাখা হয়েছে ‘সৌরভ’। শনিবার ( ১ জুলাই) সন্ধ্যায় ওই কিশোরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ভর্তির দিন তিনি অসুস্থ থাকায় ও তার পাশে পরিবারের কেউ না থাকায় পিতার নাম ভুল লেখা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ওই শিশুর পিতার নাম গোলাম কিবরিয়া বড় মনি হবে। এ সময় কিশোরী বড় মনিরের শাস্তি দাবি করেন।
সামাজিক যোগেযাগ মাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে প্রকৃত বাবা কে? যিনি গর্ভে ধারণ করলেন তার চেয়ে বেশি খবর কে রেখেছেন? পিতৃপরিচয়হীন নবজাতকের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কি ঘটবে?
এদিকে টাঙ্গাইল ব্যুরো হাসপাতালের সমন্বয়কারী হারুন অর রশিদ বলেন, ওই কিশোরী বুধবার বিকালে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে ডা. মালেকা শফি সিজারিয়ান অপারেশন করেন। ডা. মালেকা শফি মঞ্জু বলেন, বর্তমানে ওই কিশোরী সুস্থ রয়েছেন। তবে নবজাতকটি কিছুটা অসুস্থ থাকায় এনআইসিওতে রাখা হয়েছে। ওই কিশোরী আমাদের দ্রুত সিজার করতে বলেন। তিনি ৩৭ সপ্তাহের গর্ভবর্তী ছিলেন।
আরও পড়ুন <> কুমারীর পেটে বড় হচ্ছে ভ্রুন, পাল্টাপাল্টি মিছিল
এ খবরে ফের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। নবজাতকের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ভাসছে নতুন প্রশ্ন? যার জন্ম নিয়ে এতো হৈ চৈ, মিছিল পাল্টা মিছিল, ঝাড়ু মিছিল। সংবাদ সম্মেলন সেই নবজাতকের জীবনের নিরাপত্তা কতটুকু নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল কিংবা আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, মানবাধিকার কমিশন কিংবা নারীবাদীরা?
গোলাম কিবরিয়া টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা বাস কোচ মিনি বাস মালিক সমিতির মহাসচিব এবং টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসানের (ছোট মনির) বড় ভাই।
গত ৫ এপ্রিল গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন ওই কিশোরী। মামলায় কিবরিয়ার স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলায় ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। তবে মেডিকেল বোর্ড তার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রমাণ পেলেও ধর্ষণের আলামত পায়নি। মামলার পরদিন ওই কিশোরী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া অবশ্য ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ওই মামলায় গোলাম কিবরিয়ার উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত ১৫ মে নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়।
ওইদিন রাতে অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তিনি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালেই আছেন বলে জানা গেছে।
আপন দেশ/আরএ/ এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।