কেন্দুয়া
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) এবং গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-চাল) কর্মসূচির প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করা হলেও এখনো বাস্তবায়ন হয়নি পুরো কাজ। গত ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পগুলোর কাজ কাগজে কলমে সমাপ্ত দেখিয়ে বরাদ্দকৃত টাকা/গম উত্তোলন করা হলেও বাস্তবে কোনো কাজই করা হয়নি।
অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধানরা জানেনই না যে তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা/গম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠান প্রধানরা জানান, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ ও যাদের নামে প্রকল্প এসব বিষয়ে শুধু তারাই বলতে পারবেন। প্রকল্প বরাদ্ধের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।
কেন্দুয়া পৌরসভায় অবস্থিত পারভিন সিরাজ মহিলা কলেজের মাঠে মাটি ভরাট বাবদ ৮.০ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ২/৩ বছর আগে তিন লাখ, তিন লাখ করে মোট ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু গত অর্থ বছর মাঠে মাটি ভরাটের ব্যাপারে কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলাতে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির ২য় বাস্তবায়নের বরাদ্দের পরিমাণ ২৯,৭২,৩৩৪/- টাকা ( ঊনত্রিশ লাখ বাহাত্তর হাজার তিন শত চৌত্রিশ) টাকা। আর গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-চাল) কর্মসূচির ২য় কিস্তি বাস্তবায়নে বরাদ্দের পরিমাণ ৪২.০৫ মে. টন গম এবং গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা- গম) কর্মসূচির
২য় কিস্তি বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ৮৪.১০ মে. টন গম।
এছাড়া গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা- নগদ অর্থ) কর্মসূচির ২য় কিস্তি বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ৬৩,০৪,৯৯৫/- (তেষট্টি লাখ চার হাজার নয়শত পচানব্বই) টাকা।
>>> আরও পড়ুন: কাঁচা মরিচ কেজিতে ৩০০ টাকা লোকসান গুনে যুবকের প্রতিবাদ
প্রতিটি ইউনিয়ন এবং পৌরসভাতে রয়েছে পৃথক বরাদ্দ। স্থানীয় এমপি কর্তৃক প্রদত্ত বরাদ্দের তালিকার কয়েকটি বিশেষ প্রকল্প হচ্ছে- (১) কেন্দুয়া পৌরসভায় অবস্থিত পারভিন সিরাজ মহিলা কলেজের মাঠে মাটি ভরাট বাবদ ৮.০ মেট্রিক টন গম; (২)কেন্দুয়া পৌরসভার পশুর হাটের মাটি ভরাট বাবদ ২.০ লাখ টাকা; (৩) দিগদাইর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মাটি ভরাট বাবদ ৫০ হাজার টাকা; (৪) দিগদাইর ঈদগাহ মাঠে মাটি ভরাট বাবদ ৩.০ মে. টন চাল; (৫) কেন্দুয়া আঠারবাড়ি রাস্তা থেকে হেলিপ্যাডের পশ্চিম দিকে রিয়াজ উদ্দিন সাহেবের বাড়ির রাস্তা সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা; (৬) মজলিশ নূর মিয়ার বাড়ি হতে সুলতান মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা; (৭) কাউরাট মসজিদ থেকে ঈদগাঁ মাঠের রাস্তা সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা; (৮) কুন্ডলী হাবিব মিয়ার বাড়ি থেকে জফরপুর একনইসিয়ার খাল পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার বাবদ ৫.০ মে. টন চাল; (৯) সাহাপাড়া গরুহাট রাস্তা সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা; (১০) কাউরাট ঈদগাহ মাঠে মাটি ভরাট বাবদ ১ লাখ টাকা।
এই ১০টি কাজ ছাড়াও বিশেষভাবে উল্লেখ করার মতো আরেকটি কাজ হচ্ছে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) সাধারণ দ্বিতীয় পর্যায় কান্দিউড়া ইউনিয়নের কেন্দুয়া মদন পাকা রাস্তা থেকে বৈরাটি রতন মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত বাবদ ৮১,৮৫৯/- (একাশি হাজার আটশত ঊনপঞ্চাশ) টাকার কাজ। উল্লেখিত ১১টি কাজসহ কেন্দুয়া উপজেলার সরকারি বরাদ্দের সব প্রকল্প প্রকল্পগুলো সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে কাজ শেষ হলে কেন্দুয়া উপজেলার প্রভূত উন্নতি সাধিত হবে।
এ ব্যাপারে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাবেরী জালালকে ফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, কোনো নির্দিষ্ট প্রকল্পের বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে তা আমাকে জানালে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, এবার প্রকল্পগুলো অর্থ বছরের শেষ সময়ে এসেছে তাই গত ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হয়নি। প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করে সরকারি ফান্ডে রাখা হয়েছে। এখন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।
আপন নিউজ/এমএমজেড
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।