Apan Desh | আপন দেশ

পরকীয়া প্রেমিকের সহায়তায় ঘুমন্ত স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করল স্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৪৯, ৮ আগস্ট ২০২৩

আপডেট: ০০:০১, ৯ আগস্ট ২০২৩

পরকীয়া প্রেমিকের সহায়তায় ঘুমন্ত স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করল স্ত্রী

ছবি : আপন দেশ

নোয়াখালী: নোয়াখালীর সেনবাগে স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে পরকীয়া প্রেমিক নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন স্ত্রী রজ্জবের নেছা রিনা (৩৫)। এ ঘটনায় রিনা বেগম গ্রেফতার হলেও তার পরকীয়া প্রেমিক এখনো পলাতক আছেন।

নিহত মো. মঈন উদ্দিন (৪৫) উপজেলার ডুমুরুয়া ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের হরিণকাটা গ্রামের ফকির বাড়ির মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। চট্রগ্রামের ধনিয়ালাপাড়া এলাকায় তিনি নিজের একটি রেস্তোরাঁ চালাতেন। 

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেলের দিকে অভিযুক্ত স্ত্রী রিনাকে আদালতে হাজির করেন সেনবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ফারুক। এরপর স্বামী হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইকবাল হোসাইনের আদালত এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন।   

এর আগে, রোববার (৬ আগস্ট) দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার ডুমুরুয়া ইউনিয়নের হরিণকাটা গ্রামে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। পরে সোমবার (৭ আগস্ট) রাতে ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। 

>>> আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতার রিনার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, নিহত মঈন উদ্দিন তার ব্যবসার কাজে প্রায়ই চট্টগ্রাম শহরে থাকতেন। এ সুযোগে গত ২-৩ বছর ধরে তার স্ত্রী রিনা বাড়ির পাশের মো. মাসুদ (৩৫) নামে এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময়ে তারা অসংখ্যবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। একপর্যায়ে বছর খানেক আগে রিনাকে তার স্বামী ডিভোর্স দেন। ডিভোর্স দেয়ার ফলে সে বাবার বাড়ি চলে যায়। তবে সংসারে তিনটি সন্তান থাকায় তাদের দিকে তাকিয়ে রিনাকে পুনরায় সামাজিকভাবে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এরপরও তার চরিত্রর পরিবর্তন ঘটেনি। 

ওসি আরও বলেন, এরপরও বিভিন্ন সুযোগে সে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক চালাতে থাকে। স্ত্রীর পরকীয়ার জের ধরে পরকীয়া প্রেমিক মাসুদের সঙ্গে মঈন উদ্দিনের বড় ধরনের শক্রতা সৃষ্টি হয়। ফলে মাসুদ তাকে একাধিকবার হত্যার হুমকি দেয়। মঈন উদ্দিন বাড়িতে এলে বিষয়টি সহ্য করতে পারত না মাসুদ। তাই গত ৩-৪দিন আগে মঈনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রিনা ও মাসুদ।  

ওসি বলেন, নিহত মঈন গ্রামের বাড়িতে এলে নিয়মিত গরুর দুধ পান করত। পরিকল্পনা অনুযায়ী মাসুদ রিনাকে ১৪-১৫টি ঘুমের ওষুধ দেয়। গত রোববার রাত ৯-১০টার দিকে সেই ঘুমের ওষুধ দুধের সঙ্গে মিশিয়ে মঈনকে খাইয়ে দেয় রিনা। এতগুলো ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কারণে মঈন অচেতন হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে রাত ৩টার দিকে মাসুদ ও রিনা তাকে ঘর থেকে বের করে বাড়ির উঠানে নিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করে। পরে বাড়ির উঠানে তাকে মুর্মূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে ঘরে ঢুকে উল্টো নাটক সাজায় ঘাতক স্ত্রী রিনা। 

এ ঘটনায় ভিকটিমের মা রাহেলা আক্তার (৬০) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সেনবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ ঘটনার ১৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত স্ত্রীকে গ্রেফতার করে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে। একই সঙ্গে হত্যার রহস্য উদঘাটন করে।  

আপন দেশ/প্রতিনিধি/জেডআই/এমএমজেড/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়