আইনমন্ত্রীর সঙ্গে লালবৃত্তে সাবিকুন নাহার বেগম ও অহিদুল ইসলাম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিজয়ী হয়েছেন আনিসুল হক। তিনি সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী। নয়া ভোটে নির্বাচিতদের শপথ বুধবার। সব কিছু ঠিক থাকলে তিনিই টানা দ্বিতীয়বারের আইনমন্ত্রী। শপথের পরদিন মন্ত্রণালয় বণ্টন।
এদিকে আনুকুল্য পাবার আশায় আগে-ভাগেই মন্ত্রীর গুলশানের অফিসে ফুল নিয়ে হাজির অনেকেই। জানালেন ফুলের শুভেচ্ছা। তাদের মধ্যে আছে দুর্নীতি মামলার আসামিও।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকালে মন্ত্রীর বাসার দৃশ্য এটি।
ছবিতে দেখা যায়, বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিআরএসএ) নেতারা মন্ত্রীকে ফুল দিচ্ছেন। সেখানে অন্যদের সঙ্গে আছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ঢাকার জেলা রেজিস্ট্রার মো. অহিদুল ইসলাম। শরীক হয়েছেন অনিয়মের দায়ে সাসপেন্ড হওয়া রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহারও।
এছাড়াও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারোয়ার, আইজিআরএ’র দায়িত্বে থাকা যুগ্ম-সচিব (মতামত) উম্মে কুলসুমসহ বেশ ক’জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
আসামি অহিদুল
ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার মো. অহিদুল ইসলাম দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়েরকৃত মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে গতবছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলা করে সংস্থাটি। এজাহারে অহিদুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬(২) এবং ২৭(১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এফআইআর’এ উল্লেখ করা হয়, অহিদুল ইসলাম ২০০০ সাল থেকে ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর পর্যন্ত ১ কোটি ২১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৪৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিন্নাতুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরকালে অহিদুল গাজীপুর জেলা রেজিস্ট্রার ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার। মামলাটির এখন তদন্ত চলছে।
সাবিকুন নাহারের তদন্ত চলছে
ঢাকা জেলার সাবেক রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহারের বিরুদ্ধেও দায়ের করা অভিযোগের তদন্ত করছে দুদক। বর্তমানে গাজীপুর জেলা রেজিস্ট্রার। সাবিকুন্নাহার এবং তার পরিবার সদস্যদের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান করেছে দুদক। অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির নথিপত্র চাওয়া হয়।
একই সঙ্গে সাবিকুন নাহারের স্বামী সৈয়দ মো. আলমগীর, ছেলে সৈয়দ মো. সামিন ইয়াসার, মেয়ে সাবাহ ও ইকরার সম্পদেরও তথ্য চাওয়া হয়। সাবিকুন নাহার ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিভিন্ন জেলা রেজিস্ট্রি অফিসহ সংশ্লিষ্ট ২৪ দফতরে চিঠি পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন>> ন্যায় প্রতিষ্ঠার দুদকে চলছে অন্যায়
নিবন্ধন অধিদফতরের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনে’র অভিযোগ আনা হয়। চিঠিতে সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গের নামে কোনো জমি/প্লট/ফ্ল্যাট/বাড়ি/দোকান ইত্যাদি রেজিস্ট্রেশন থাকলে বিনা খরচে দলিলের সার্টিফায়েড কপি অনুসন্ধান কর্মকর্তার হাতে পৌঁছানোর অনুরোধ জানানো হয়।
সাবিকুন নাহারের বর্তমান ঠিকানা-ফ্ল্যাট-এ/২,বাড়ি নং-৩৭, রোড-১০/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা এবং স্থায়ী ঠিকানা, শাক্তা (পশ্চিম পাড়া), কেরাণীগঞ্জ, ঢাকার ঠিকানায় নোটিশটি পাঠানো হয়।
এর আগে, ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার বেগমের অনিয়ম ও দুর্নীতি হাতেনাতে ধরে ফেলেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হক। এ কারণে তাকে চাকরি থেকে সাসপেন্ড (সাময়িক বরখাস্ত) করা হয়।
আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আসামির ফটোসেশন; নেপথ্যে কী তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন।
আপন দেশ/এবি/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।