উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু ও শিক্ষার্থী সালমা খাতুন। ছবি: সংগৃহীত
প্রথমবার অধরা, দ্বিতীয়বারও তাই। বিধিবাম তৃতীয়বারের পরীক্ষায়। প্রক্সি পরীক্ষা দিতে গিয়ে কারাগারে যেতে হলো সালমা খাতুনকে। কারাবন্দি থাকতে হবে এক বছর। গুনতে হবে ২০০ টাকাও। তিনি আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।
আজ (১০ ফেব্রুয়ারি) কাজী মারজাহান নিতুর পরিবর্তে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। মিতু চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএ/বিএসএস সমাজতত্ব বিষয়ের চতুর্থ সেমিস্টারের তৃতীয় পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
এ সময় প্রবেশপত্রের ছবির সঙ্গে চেহারায় মিল না থাকায় কক্ষ পরিদর্শক তাকে সন্দেহ করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজওয়ানা নাহিদ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের সালমাকে ১ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন তিনি। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) আলমডাঙ্গা মহিলা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
সালমা খাতুন আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের সম্মান ৩য় বর্ষের ছাত্রী। আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার রাধিকাগঞ্জের জহুরুল ইসলামের মেয়ে তিনি।
জানাযায়, গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএ/বিএসএস চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা চলছে। আলমডাঙ্গা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু পরীক্ষার্থী ছিলেন। ইতোমধ্যে দুটি পরীক্ষা শেষও। শনিবার ছিল তৃতীয় পর্বের সমাজতত্ব পরীক্ষা। গত ২ দিনের মতো এদিনও পরীক্ষা দিতে যাননি কাজী মারজাহান নিতু।
তার পরিবর্তে আলমডাঙ্গা মহিলা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন সালমা খাতুন। বিপত্তি বাধে কক্ষ পরিদর্শক কর্তৃক উত্তরপত্র স্বাক্ষরের সময়। কক্ষ পরিদর্শক প্রবেশপত্রের ছবির সঙ্গে সালমা খাতুনের কোনো মিল পাননি। ফলে জিজ্ঞাসাবাদে ফেঁসে যান সালমা খাতুন। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্র সচিবের কক্ষে।
বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজওয়ানা নাহিদ। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সালমা খাতুনকে ১ বছরের কারাদণ্ডাদেশ ও ২০০ টাকা জরিমানা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজওয়ানা নাহিদ বলেন, পাবলিক পরীক্ষা আইন ১৯৮০ সালের ৩ এর খ ধারায় এ শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গা মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আশুরা খাতুন বলেন, ডিগ্রি চতুর্থ সেমিস্টারের সমাজতত্বের তৃতীয় পত্রের পরীক্ষা ছিল। প্রবেশপত্রের ছবির সঙ্গে পরীক্ষার্থীর চেহারার মিল না থাকার কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সে সময় তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার করে লিখিতভাবে ক্ষমাও চেয়েছেন। এ ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি শেখ গণি মিয়া বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে সালমার ১ বছরের জেল হয়েছে। এ ঘটনায় কলেজের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তাকে চুয়াডাঙ্গা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।