সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রাথমিক তদন্তে তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা উপার্জন ও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যে অর্থ পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, নুরুল ইসলাম নাহিদ তার মন্ত্রিত্বকালীন সময়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কমিশন গ্রহণ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়েছেন। এসব টাকা তিনি বিদেশে পাচার করেছেন। নাহিদের যুক্তরাজ্য প্রবাসী ভাই ডা. নজরুল ইসলামের মাধ্যমে লন্ডনে এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী তার বন্ধু কামাল আহমেদের মাধ্যমে আমেরিকায় অর্থ পাচার করা হয়েছে।
নাহিদকে কেন্দ্র করে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। যা তার মন্ত্রিত্বকালীন দুর্নীতির অন্যতম প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে। দুদকের তদন্তে নাহিদের হলফনামায় উল্লেখিত সম্পদের পরিমাণও সন্দেহজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। ২০০৮ সালে তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ২১ লাখ ৫৭ হাজার ৯১১ টাকা। যা ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭ লাখ ৯৩ হাজার ১৩২ টাকায়। এর মধ্যে তার স্থাবর সম্পদের পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
নুরুল ইসলাম নাহিদের অর্থনৈতিক প্রাপ্তির হিসাব অনুযায়ী, ২০০৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ টাকা। যা ২০২৩ সালে বেড়ে ৫০ লাখ ৩০ হাজার ১১৩ টাকা হয়েছে।
এদিকে তার গাড়ি বিলাসিতাও প্রশ্নবিদ্ধ। ২০২৩ সালের হলফনামায় তিনি একটি গাড়ির মূল্য ৬১ লাখ ২৫ হাজার ৪০৫ টাকা উল্লেখ করেন। যদিও গাড়ির ব্র্যান্ড বা মডেল সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত তথ্য তিনি দেননি।
তবে এর আগের হলফনামায়ও তার সম্পদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০১৩ সালে তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯৮ লাখ ৫ হাজার ৫৫০ টাকা। ২০১৮ সালে তা দাঁড়ায় ১ কোটি ৫৮ লাখ ১৬ হাজার ৯ টাকা।
এছাড়া রাজধানী ঢাকার উত্তরায় একটি ফ্ল্যাট, নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকায় জমি, সিলেটের বিয়ানীবাজারে অকৃষি জমি, বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং স্ত্রীর নামে সঞ্চয়পত্রের তথ্যও তার সম্পদের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
দুদক তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাহিদ যে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন, তার পরিসংখ্যান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় নাহিদের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে নির্বাচনে হলফনামা জমা দেয়ার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নুরুল ইসলাম নাহিদের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১২ গুণ বাড়ে। পাশাপাশি তার আয়ের পরিমাণ বেড়েছে ১৩ গুণ।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।