Apan Desh | আপন দেশ

অবৈধ সম্পদে ভরা বাংলাদেশ ব্যাংকের লকার, খোলার আদেশ আসছে আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:০০, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৭:১৪, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

অবৈধ সম্পদে ভরা বাংলাদেশ ব্যাংকের লকার, খোলার আদেশ আসছে আজ

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকের মহানিরাপত্তা এলাকার কয়েন ভল্টে অর্থ-সম্পদ জমা রাখার ব্যক্তিগত সব লকার ফ্রিজ করার অনুরোধ করা হয়েছে। ওই সব বিশেষ লকারে গোপনে অপ্রদর্শিত বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ জমা রয়েছে বলে মনে করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এ লকারগুলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনোভাবেই যাতে লকার থেকে অর্থ-সম্পদ সরিয়ে নিতে না পারেন, সে জন্য সব লকার ফ্রিজ করার অনুরোধ জানিয়ে রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন দুদক পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান।

ওই চিঠিতে বলা হয়, গত ৩০ জানুয়ারি দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দুদকের কার্যক্রম ও সম্পদ পুনরুদ্ধার বিষয়ে আলোচনা করেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত সম্পদ নিয়েও আলোচনা হয়। অর্থ উপদেষ্টা ভল্টে রক্ষিত লকারের সম্পদ ফ্রিজের সম্মতি দিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গভর্নরকে দেয়া দুদকের চিঠি ও অর্থ উপদেষ্টার সম্মতি থাকায় ভল্টের সব লকারের সম্পদ ফ্রিজ করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে এর মালিকরা তাদের লকার থেকে কোনো ধরনের অর্থ-সম্পদ সরিয়ে নিতে পারবেন না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই সব লকার খোলা ও লকারে থাকা অর্থ-সম্পদের তালিকা তৈরির অনুমতির জন্য সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি)  ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজের কাছে আবেদন জমা দিয়েছে দুদক। বিকেলে আবেদনটি জমা দেয়ার পরই এ-সংক্রান্ত আদেশ দেয়া সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত আদেশ দেয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আদালতের আদেশ পাওয়ার পর ওই সব লকার খোলা, অর্থ-সম্পদ গণনা ও তালিকা তৈরির জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত করার জন্য দু-এক দিনের মধ্যে ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন জমা দেবে দুদক।

আরও পড়ুন<<>> বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন কার্যালয় ছিল এস আলমের!

জানা গেছে, দুদক পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি বিশেষ অনুসন্ধান দল বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওই সব বিশেষ লকারের সম্পদ অনুসন্ধান করছে। ওই দল গত ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর) ঢাকার বাসায় অভিযান চালিয়ে আলমারির নিচে বিশেষ কায়দায় রাখা নগদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে। ওই অভিযান থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে থাকা লকারগুলোর সন্ধান মেলে। পরে এস কে সুরের লকার খুলে দেশি-বিদেশি মুদ্রা, স্বর্ণালংকারসহ ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়, যা তার নিয়মিত আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করা হয়নি।

আরও পড়ুন<<>> ওয়াকিদের স্মার্ট ক্যারিশমায় শীর্ষ খেলাপিরাও পেত সিআইবি ছাড়পত্র

দুদকের চিঠিতে আরও বলা হয়, তল্লাশিকালে লকার-সংক্রান্ত রেজিস্টার পরীক্ষা করে দেখা যায় সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর সিলগালা লকার পাওয়া যায়। ওই সব লকারের ভেতর সিলগালা কোটায় অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকার অবকাশ রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ভল্টে রক্ষিত কর্মকর্তাদের বিশেষ লকার খুলে রক্ষিত মালামাল যাতে কেউ নিতে না পারে, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়