ফাইল ছবি
ঢাকা: নাকাল দেশবাসীকে স্বস্তি দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট এবং মূল্যস্ফীতিতে নাকাল দেশবাসী। তার আগে করনীয় জানতে দেশের অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার ও সাংবাদিকদের সঙ্গে পরামর্শ নিচ্ছে সংস্থাটি।
এরই অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) প্রবীণ অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বৈঠক করেছেন। ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্পষ্টই বলছেন, টাকা ছাপিয়ে সরকারকে আর ঋণ না দেওয়া ঠিক হবে না।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি। তাই অর্থনীতির বিভিন্ন সেক্টরের সঙ্গে আমরা আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেসব পরামর্শ আসবে সে অনুযায়ী আগামী মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হবে।
তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি এবং সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশও তার মাশুল গুণছে।
মুখপাত্র মেজবাউল হক আরও বলেন, বর্তমান মুদ্রানীতির যথাযথ বাস্তবায়ন এবং নতুন করে টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে আরও অর্থনীতিবিদ, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম, চেম্বার অব কমার্স এবং অর্থনৈতিক খাতের বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা পর্যায়ক্রমে চালানো হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে মুদ্রার বিনিময় হার বাংলাদেশ কৃত্রিমভাবে ধরে রেখেছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ডলারের বিনিময় হার অনেকটা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে আমদানি ব্যয় বেড়ে যায়। এটি মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ। যদিও এখন তারা বলছেন, মূল্যস্ফীতি কেবল বৈশ্বিক কারণে হচ্ছে না, নিজস্ব বাজার ব্যবস্থাপনাও এর জন্য দায়ী।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূলত জ্বালানি তেল, এলএনজি, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির দায় মেটানোর জন্য ডলার বিক্রি করে। পাশাপাশি সরকারের বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধের জন্যও ডলার বিক্রি করে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে রেকর্ড সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখনো বিক্রি করছে, যা মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
২০২২ সালের ২ জানুয়ারি ডলারের আন্তঃব্যাংক বিনিময় হার ছিল ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা, যা এখন ১১০ টাকা। অর্থাৎ এ সময়ে টাকার দরপতন হয়েছে ২৮ দশমিক ২১ শতাংশ।
এর মধ্যে নীতি সুদহার বাড়ানো হলেও ব্যাংকঋণের সুদহার অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৯ শতাংশেই রয়ে গেছে। ফলে নীতি সুদহার বৃদ্ধির প্রভাব তেমন একটা অনুভূত হয়নি।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।