ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা: রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটার কারণ খুজছে সরকার। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিদেশ বহু মানুষ যাচ্ছে। কিন্তু রেমিট্যান্স প্রবাহ সেভাবে আসছে না। আগে আসতো, এখন তো তার চেয়েও বেশি আসার কথা। অথচ ধীরে ধীরে তা কমে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়, খতিয়ে দেখার বিষয়। কেনো এমনটা হচ্ছে, আমরা সেটাই এখন খুঁজছি।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী ‘পাবলিক ফিন্যান্সিয়াল সামিটে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে সার্বিক চিত্র তুলে ধরে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে এ সামিটের আয়োজন করে।
রেমিট্যান্স ঠিক তো, অর্থনীতিও ঠিক- এমন মন্তব্য করে মুস্তফা কামাল বলেন, রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণ খুঁজতে হবে, খতিয়ে দেখতে হবে। বছরের শুরুর দিকে যেভাবে আসছিল, সেটা হঠাৎ কমতে শুরু করলো কেন? দ্রুত রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য সমাধানের পথ বের করতেই হবে।
তরুণ-যুবকরা দেশকে ভালোবাসেন, তারা বৈধপথেই রেমিট্যান্স পাঠাবেন জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি- তরুণরা অনেক সচেতন। অনেক তরুণ-যুবক স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে গিয়ে স্থায়ী হচ্ছেন। তাদের পরিবার দেশে। তাদের জন্য তো তারা অর্থ পাঠিয়ে থাকেন। শ্রমিকরাও বৈধপথে বিদেশ যাচ্ছেন। রেমিট্যান্স আসার অনুপাত তো বিদেশে যাওয়া মানুষের যে হার, তার সঙ্গে মেলে না।
রেমিট্যান্স কাঠামো সংস্কার করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিবিদ, বিশেষজ্ঞর কাছে আমরা চমৎকার কিছু উদ্ভাবনী পরামর্শ চাই। আপনারা রেমিট্যান্স প্রবাহ ঠিক রাখতে সংস্কারের প্রস্তাব দেন, আমাদের ভালো ভালো পরামর্শ দেন; আমরা তা গ্রহণ করবো এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেবো।’
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেকও দিনব্যাপী এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ গত এক দশকে অর্থনীতিতে অনেক উন্নতি করেছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনীতি টেকসই দেখতে চায়। বাংলাদেশ সরকারকে সিনিয়র সিটিজেনের (বয়স্ক নাগরিক) সুরক্ষা ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দারিদ্র্যোর হার আরও কমাতে হবে। অর্থপাচার ও সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবস্থাপনায় আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এগিয়ে যেতে হবে।
এদিকে, দিনব্যাপী এ কর্মশালা শুরু হয় সকাল সাড়ে ৯টায়। বেলা ১১টার দিকে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থপনা পুনর্গঠন বিষয়ে প্যানেল আলোচনা হয়। এতে আলোচক ছিলেন সাবেক পাঁচ অর্থসচিব। তারা হলেন- মো. জাকির আহমেদ খান, ড. মোহাম্মদ তারেক, মো. ফজলে কবির, মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, আব্দুর রউফ তালুকদার। পরে সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশনের টাকাসহ ব্যাংকে পাঠানোর যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার, তা নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
দুপুরে মধ্যাহ্ন বিরতির পর কর্মশালার দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রভাব মোকাবিলায় অর্থনীতির চলমান ব্যবস্থা পুনর্গঠনসহ নানা বিষয়ে কয়েকটি সেশন পরিচালনা করা হয়। অর্থনীতিবিদ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা সেশনগুলোতে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।