ফাইল ছবি
চতুর্থ প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাংক মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির শেয়ারদর কমছে। বিনিয়োগের পরিমাণও কমে আসছে।
এদিকে গ্রাহকের টাকা মেরে দেয়া কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলার অগ্রগতিও নেই। মিডল্যাণ্ড ব্যাংকে ঘটছে কি? সব মিলিয়ে আমানতকারী, সাধারণ গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
কোম্পানী প্রোফাইল সূত্র বলছে, গত ১৫ জানুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ১৫ দশমিক ৬ টাকা। ১৪ ফেব্রুয়ারি তা এসে দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ৪ টাকা। মাসের ব্যবধানে শেয়ার দর কমেছে ১ দশমিক ২ টাকা। শতাংশের হিসেবে কমেছে ৭ দশমিক ৬৯ টাকা।
কোম্পানিটি থেকে প্রতিনিয়তই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। যা ব্যাংকটির শেয়ারধারীর সংখ্যা দেখলেই বোঝা যায়।
আরও পড়ুন<<>> শেয়ার কেলেঙ্কারীতে দন্ডপ্রাপ্ত সেই এনআরবি ব্যাংক আসছে বাজারে!
গত বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটিতে বিনিয়োগ ছিল ১৭ দশমিক ০৬ শতাংশ। আর গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ কমেছে ০ দশমিক ৯১ শতাংশ।
জানা গেছে, ব্যাংকটি ২০২২ সালে ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়। শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তি হয় ২০২৩ সাল। ২০২৩ সালের ডিভিডেন্ড ঘোষণার সময় এখনো হয়নি। অপেক্ষা করতে হবে মে মাস নাগাদ।
ব্যাংকটির সিনিয়র এসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (পিআরডি) মো. রাশেদুল আনোয়ার আপন দেশকে বলেন, ব্যাংকের অডিট শেষ হওয়ার পর পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্ত নেবে কত শতাংশ ডিভিডেন্ড দেবে। ব্যাংক চাইলেই ইচ্ছামতো ডিভিডেন্ড দিতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক ডিভিডেন্ড দেয়ার ব্যাপারে একটি দিক নির্দেশনা দেবে।
গত বছরে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটি তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২৩) শেয়ার প্রতি আয় ০ দশমিক ২২ টাকা। চতুর্থ প্রান্তিক আসন্ন।
থমকে আছে দুদকের ফাইল
মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৪৬ গ্রাহকের তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ডিসেম্বরে মামলা হয়। মামলার বাদী গাজীপুর দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান। ব্যাংকের এক শাখা ব্যবস্থাপকসহ ৭ কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়। আসামিরা হলেন, মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেডের নরসিংদী শাখার ব্যবস্থাপক মো. ফারুক উর রহমান, সাবেক অফিসার মো. মোকছেদুল হোসেন, সার্ভিস অ্যাসোসিয়েট শাহরিন আহমেদ উর্মি, জুনিয়র অফিসার মো. হাসানুজ্জামান, সিএসএম এস. এম লুৎফুল কবির, সিএসএম রাজীব আহমেদ এবং সার্ভিস অ্যাসোসিয়েট সনেট কুমার দাস।
মামলার এজাহারে বলা হয়, নরসিংদী শাখার ৪৬ জন হিসাবধারীর মধ্যে ১৯ জন গ্রাহকের স্বাক্ষর জাল করে জালিয়াতির মাধ্যমে ১৯টি এসওডি ঋণ হিসাব তৈরি করা হয়। অবশিষ্ট হিসাবসমূহের গ্রাহকের স্বাক্ষর জাল করে নতুন হিসাব খোলা হয়। চেকের পাতা চুরি ও স্বাক্ষর জাল করে আরটিজিএস, বিইএফটিএন, বেএসটিসিএস ও নগদ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন আসামিরা। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রতারণা, জালিয়াতি, অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করা হয়। ওই শাখার ৪৬টি হিসাব থেকে বিভিন্ন সময়ে ৩ কোটি ৭ লাখ ৩২ হাজার ৩২৩ টাকা আত্মসাৎ করেন আসামিরা। ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সময়ে আসামিরা ধাপে ধাপে ওই অর্থ আত্মসাৎ করেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাশেদুল আনোয়ার জানান, যাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে তাদের সবার সার্ভিস বেনিফিট স্থগিত করা হয়েছে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যাংক পদক্ষেপ নিয়েছে। শাখা ব্যবস্থাপকের প্রমোশন বাতিল করে ডিমোশন করা হয়েছে। কাউকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়নি। তবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
আপন দেশ/টি/এসএমএ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।