ডলার নিয়ে সুখবর, রেমিট্যান্সেও সুবাতাস

দীর্ঘদিন ধরে ডলার সঙ্কট চলছে। এ নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে সঙ্কট কিছুটা কমেছে। ডলার কারসাজিতে জড়িত ব্যাংক ও মানি চেঞ্জারদের শাস্তির আওতায় আনা হয়। এরপর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানও। বর্তমানে সবমিলিয়ে দেশে ডলারের সঙ্কট কিছুটা কমেছে। একই সঙ্গে টানা কয়েক মাস রেমিট্যান্সেও বইছে সুবাতাস।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এলসি পেমেন্ট দিতে না পারায় একসময় রেমিট্যান্স কেনায় মরিয়া হয়েছিল ব্যাংক। ফলে প্রতি ডলারের দাম উঠেছিল ১২০ টাকায়। তবে এখন রেমিট্যান্সের ডলার ১১৪-১১৫ টাকা দামে পাওয়া যাচ্ছে। রেমিট্যান্সের ডলারের দাম কমায় ১১০ টাকায় নেমে এসেছে। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোতে যে তারল্য সঙ্কট ছিল, সেটাও কমে এসেছে কিছুটা।

খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, ডলার সঙ্কট কমে আসার পেছনে কয়েকটি উদ্যোগ কাজে এসেছে। এর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়াকড়ি আরোপের কারণে আমদানি কমে আসা। একইভাবে ডলারের দাম নিয়ে কড়াকড়ি অবস্থান থেকে সরে আসায় রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় বেড়েছে। পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকা অদল-বদলের (সোয়াপ) সুবিধার কারণে সঙ্কট কিছুটা কমে এসেছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই দেশে ডলারের সঙ্কট শুরু হয়। দুই দেশের এ যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ে। এতে আমদানি খরচ হঠাৎ বেড়ে যায়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই ২০২২ সালের জুনে ৮৩৭ কোটি ডলারের আমদানি দায় শোধ করতে হয় বাংলাদেশকে। এরপর ঋণপত্র (এলসি) খোলায় কড়াকড়ি আরোপ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এলসি খোলার বিপরীতে শতভাগ পর্যন্ত নগদ টাকা জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা দেয়া হয়।

এখন প্রবাসী আয়ের ডলারের দাম ১১৪ থেকে ১১৫ টাকা। ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম নেমেছে ১১০ টাকায়। কমেছে ব্যাংকের তারল্য সংকটও।

এর ফলে কমতে থাকে আমদানি দায়। কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম আমদানি দায় পরিশোধ হয় গত ফেব্রুয়ারিতে। এ মাসে আমদানি দায় পরিশোধ হয় ৪৬৭ কোটি ডলারের। তার আগের মাস জানুয়ারিতে আমদানি দায় পরিশোধ হয়েছিল ৫৯৬ কোটি ডলারের। আমদানি দায় পরিশোধ হলো সংশ্লিষ্ট মাসের প্রকৃত ডলার খরচ। ফলে এ হিসাবে দেখা যায় ডলারের ওপর চাপ কিছুটা কমে এসেছে।

এরই মধ্যে সুবাতাস বইছে রেমিট্যান্সে। ধারাবাহিকভাবে কিছুটা উন্নতির দিকে অর্থনীতির অন্যতম এ সূচক। গত ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। এরপর জানুয়ারিতে আসে ২১১ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে বেড়ে দাঁড়ায় ২১৬ কোটি ডলারে। চলতি মার্চের প্রথম ২৬ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ১৭২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এ মাসেও রেমিট্যান্স দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

আপন দেশ/এসএমএ