Apan Desh | আপন দেশ

রির্জাভ চুরির গুজব, যা বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:২০, ১৫ মে ২০২৪

রির্জাভ চুরির গুজব, যা বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ছবি: সংগৃহীত

ডলার সংকটে প্রতিনিয়ত কমছে দেশের রির্জাভের পরিমাণ। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলার। যা এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। এমন সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রির্জাভ থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার ভারতীয় হ্যাকাররা চুরি করে নিয়েছেন, এমন একটি তথ্য দেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমের সূত্র ধরে এসব তথ্য ছড়ানো হয়েছে। তবে এসব তথ্যকে গুজব বলে দাবি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘বাংলাদেশের নতুন রিজার্ভ চুরি’ বিষয়ে প্রকাশিত খবরটি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং ভিত্তিহীন। দেশের রিজার্ভ সুরক্ষিত রাখতে আমাদের ফেডারেল রিজার্ভের সঙ্গে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া আমরা নিয়মিত রিজার্ভের অ্যানালগ এবং ডিজিটাল হিসাব পরীক্ষা করছি। পাশাপাশি প্রতিদিনই রিজার্ভের হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। ফলে রিজার্ভ চুরি বা হ্যাকিংয়ের মতো ঘটনার সুযোগ নেই।

আরও পড়ুন>> আইএমএফের শর্ত পূরণে যেসব প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে

তিনি জানান, অতীতেও কিছু অসাধু চক্র নিজেদের স্বার্থে এমন ভুয়া নিউজ প্রচার করেছে। আদতে তার কোন প্রমাণ মেলেনি।

ভারতীয় গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট হ্যাকারদের সূত্র ধরে বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে কিছু অর্থ সরিয়ে নিয়েছে হ্যাকাররা। বিষয়টি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ এবং ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে জানাজানিও হয়ে গেছে। এমনকি দুই দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো চুপিচুপি এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। তবে এর কোন সঠিক সূত্র উত্থাপন করতে পারেনি সংবাদ মাধ্যমটি।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’ মন্তব্য নিয়ে সন্দেহ উসকে দিচ্ছে একদল অসাধু চক্র। তবে সেখানে রির্জাভ চুরির বিষয়ে কোন মন্তব্য ছিল না।

গত ৭ মে ইআরএফের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমাদের একটা গর্ব ছিল, বিদেশি ঋণ নিয়ে কখনো খেলাপি হইনি আমরা। কিন্তু সম্প্রতি তেল আমদানি করে আমরা অর্থ পরিশোধ করতে পারছি না। বিদেশিরা মুনাফা নিতে পারছে না, এয়ারলাইন্স ব্যবসায়ীরা অর্থ পাচ্ছে না। তার মানে গর্বের জায়গায় ফাটল ধরিয়ে দিয়েছে। এসব তথ্য-উপাত্ত বাংলাদেশ ব্যাংক দেয়। সেখানে প্রবেশ নিষেধ। তার মানে সেখানে ‘ডাল মে কুচ কালা হে’। এখন এটা কি মসুর ডাল না কি মুগ ডাল নাকি সব জায়গায় ডাল; এটাই এখন বোঝার বিষয়।

এর আগে, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়েছিল। ৮১ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সে সময় চুরি হয়। পরে জানা যায়, এ অর্থ যায় ফিলিপাইনের মাকাতি শহরে রিজাল ব্যাংকের একটি শাখায় চারটি ভুয়া হিসাবে। সেখান থেকে দ্রুত অর্থ উত্তোলন করা হয়। এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা করেন৷

চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে রিজাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এখনো পুরোপুরি অর্থ উদ্ধার করা যায়নি।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়