ফাইল ছবি
বাংলাদেশে একটি ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপন করতে চায় চীন। দেশটির একদল ব্যবসায়ী বাংলাদেশি অংশীদারদের সঙ্গে যৌথভাবে ‘চায়না-বাংলা ব্যাংক পিএলসি’ নামে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী। সম্প্রতি তারা ব্যবসার নীতিমালা অনুসরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকে বাণিজ্যিক ব্যাংক স্থাপনের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে।
জানা গেছে, চায়না-বাংলা ব্যাংক পিএলসির দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা প্রাথমিকভাবে ১০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া পাঁচ বছরের মধ্যে আরও ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছেন তারা।
এ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হলে দেশে ৭ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এমনটাই আশা করছে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস। চীনের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ পরোক্ষভাবে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াবে। এ উদ্যোগ ব্যাংকের সেবাপ্রাপ্ত কমবেশি ৭৫ মিলিয়ন মানুষের কাছে ডিজিটাল ব্যাংকের সেবা প্রসারিত হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দল কিছু দিন আগে চীন সফর করেছে। যেখানে চীনা উদ্যোক্তাদের ডিজিটাল ব্যাংকিং কার্যক্রমের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মহাসচিব আল মামুন মৃধা গণমাধ্যমকে বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ প্রযুক্তির ব্যবহারে (ডিজিটাল) উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এজন্য ডিজিটাল ব্যাংক ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। ডিজিটাল ব্যাংক বিদ্যমান ব্যাংক পরিষেবাগুলোর তুলনায় অধিকতর সুবিধা, নিরাপদ ও তহবিল স্থানান্তর সহজ করবে।
তিনি বলেন, চীনা বিনিয়োগকারীরা যৌথভাবে ডিজিটাল ব্যাংকে বিনিয়োগ করলে প্রযুক্তিতে চীনের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের ডিজিটাল ব্যাংকিং খাতের জন্য উপকারী হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যেই আটটি ডিজিটাল ব্যাংককে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। প্রথাগত ব্যাংকগুলোর থেকে ভিন্ন এ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে শুধু অনলাইনে কাজ করা হবে। কোনো শাখা থাকবে না।
আরও পড়ুন>> দেশে ডিজিটাল লেনদেনে জড়িত ৪৫ শতাংশ মানুষ
তিনি আরও বলেন, গ্রাহকররা একটি ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা যেকোন স্থান থেকে ব্যাংকিং লেনদেন ও পরিষেবাগুলো পাবে। তাই কোনো গ্রাহককে শাখায় যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। ইতোমধ্যে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি ও কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি নামে নতুন দুটি ডিজিটাল ব্যাংকের লেটার অব ইন্টেন্ট (এলওআই) দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানা গেছে, ব্যাংক দুটি শিগগিরই কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী ছয় মাস তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে।
এছাড়া, তিন ব্যাংক মিলে করা আবেদনটি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংক এশিয়ার নেতৃত্বাধীন ডিজিটাল, ব্র্যাক ব্যাংকের নেতৃত্বাধীন বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক ও ১০ বেসরকারি ব্যাংকের সমন্বয়ে ডিজি ১০ ডিজিটাল ব্যাংকও চালু হয়ে যেতে পারে। স্মার্ট ডিজিটাল ব্যাংক, জাপান-বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক ও নর্থ ইস্ট ডিজিটাল ব্যাংককে এলওআই দেয়ার পরিকল্পনা আছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।