ছবি : সংগৃহীত
গত ৫০ বছরে দেশ থেখে ১১ লাখ ৯২ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এ সময়ে সৃষ্ট কালোটাকার পরিমাণ ১ কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। আগামী বাজেটে কালোটাকা ১০ হাজার কোটি টাকা এবং পাচার হওয়া ৫ হাজার কোটি টাকা উদ্ধারের সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।
সোমবার (৩ জুন) রাজধানীর ইস্কাটনে সমিতির কার্যালয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বিকল্প বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন হয়। এ সময় এসব তথ্য তুলে ধরেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. আইনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ১৯৭২-৭৩ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে সৃষ্ট মোট পুঞ্জিভূত কালোটাকার আনুমানিক পরিমাণ হবে ১ কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে আমরা পুঞ্জিভূত মোট কালোটাকার মাত্র ০.৯৮ শতাংশ উদ্ধারের সুপারিশ করছি। যেখান থেকে উদ্ধারকৃত আহরণ হবে ১০ হাজার কোটি টাকা।
অর্থ পাচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে মোট পুঞ্জিভূত অর্থ পাচারের আনুমানিক পরিমাণ হবে ১১ লাখ ৯২ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা। আর আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে আমরা পুঞ্জিভূত মোট অর্থ পাচারের ০.৪৯ শতাংশ উদ্ধারের সুপারিশ করছি। যেখান থেকে উদ্ধারকৃত আহরণ হবে ৫ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি জানায়, তারা সমগ্র সমাজ-অর্থনীতি-রাষ্ট্র কাঠামোকেই এমন বিকৃত করে ছেড়েছে। যা বজায় রেখে শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক সমাজ, শোভন সমাজব্যবস্থা গড়া অসম্ভব। কালোটাকার ঋণাত্মক প্রভাব পড়েছে সমাজ-সংস্কৃতি-অর্থনীতি সর্বত্র, যে কারণে এখন ‘অর্থপূজা’ সর্বজনিনতা পেয়েছে। এখন ‘অর্থপূজা’র ওপরে আর কোনো পূজা নেই।
আরও পড়ুন>> সোনা-হীরা চোরাচালানে পাচার ৯১ হাজার কোটি টাকা
সমিতি বলছে, সবকিছু বিচারে কালোটাকার রাজনৈতিক অর্থনীতির মর্মবস্তুসহ কালোটাকার মালিকদের এহেন প্রভাব-প্রতাপ ইতোমধ্যে মারাত্মক ‘স্বাভাবিক অঘটন’ ঘটিয়েছে। সেগুলো হলো- অতীতে দেশে রাজনীতি ও অর্থনীতির মধ্যে যে ভারসাম্য ছিল, সেটি আর নেই। অতীতে সরকার ও ক্ষমতার মধ্যে যে সম্পর্ক ছিল সেটি বিনষ্ট হয়েছে।
অতীতে সরকারের হাতে ক্ষমতা ছিল এখন নেই। এখন সরকার সরকারের জায়গায় আছেন, তবে ক্ষমতাহীন। ক্ষমতা রাজনীতি থেকে অভিবাসিত হয়েছে অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক কালোটাকার মালিক, রেন্ট সিকার, লুটেরা, পরজীবী, অনুৎপাদনশীল নিকৃষ্ট পুঁজির হাতে। গণতন্ত্রকে তারা ভোটের খেলা বানিয়ে ছেড়েছে- ছাড়বে। যেখানে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের স্বাধীনতা বা প্রয়োজন কোনোটাই থাকবে না বলে জানানো হয়।
আপন দেশ/এইউ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।