ছবি : সংগৃহীত
বাজারে পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অত্যন্ত চড়া। এ তিন পণ্য ছাড়াও প্রায় প্রতিটি পণ্যের দামই কমবেশি বাড়তি। যে কারণে বাজারে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বাজার খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন ও মধ্যম-আয়ের মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে।
শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
দ্রব্যমূল্যের এমন পরিস্থিতির মধ্যেই বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তবে বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাতে তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। যে কারণে বাজারেও বাজেটের কোনো ইতিবাচক প্রভাব দেখা যায়নি।
এদিন বাজারে দেখা যায়, প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। হালি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। আর একটি ডিমের দাম নেওয়া হচ্ছে ১৪ টাকা। এ দাম প্রায় বছরের যেকোনো সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ।
মিরপুর বউ বাজারে কথা হয় শাহানা বেগমের সঙ্গে। তিনি ডিম কিনতে এসেছেন। শাহানা বলেন, মাছ, মাংস খাওয়ার সামর্থ্য নেই। ডিম খাওয়াও এখন দুরূহ হয়ে গেছে। এত দামে ডিম কিনতে পারা যায় না। প্রতিদিন নিরামিষ খেতে হচ্ছে। এদিকে বাজারে অন্নান্য সবজির দামও নাগালের বাইরে।
বাজারের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সবজি আলু। গত বছর থেকে আলুর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেশি। এখন বাজারে প্রতি কেজি আলু ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা কয়েক দিন আগেও ৫০ টাকা ছিল।
জিগাতলা বাজারের আলু বিক্রেতা সামাদ মিয়া বলেন, এ বছর আর আলুর দাম কমবে না বরং দিন দিন আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। কারণ কোল্ড স্টোরেজ থেকেই আলু প্রায় ৫০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে, যা পাইকারি বাজারে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, কোল্ড স্টোরেজেও এবার খুব বেশি আলু নেই। যদি ভারত থেকে আমদানি না হয় তাহলে মৌসুম শেষে দাম আরও বাড়বে। তবে আমদানি হলে দাম কিছুটা কমতে পারে।
এদিকে ভারত থেকে আমদানির সুযোগ থাকলেও দেশে প্রতিদিন বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহে কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৭০ টাকা ছিল।
কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মহিউদ্দিন বলেন, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বাজারে পেঁয়াজের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। যে কারণে হু হু করে দাম বাড়ছে। ঈদের আগে দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটা বলা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ থাকলেও ওই দেশ ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৫৫০ ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে। শুল্ক-করসহ এ পেঁয়াজ দেশে আনতে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা খরচ হয়। যে কারণে কেউ পেঁয়াজ আমদানি করছে না। এতে বাজার শুধু দেশি পেঁয়াজের ওপর নির্ভর করেই চলছে।
এদিকে পেঁয়াজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তি আদা-রসুনের দামও। প্রতি কেজি আদা ও রসুন ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে বিভিন্ন সবজিসহ তেল, চিনি ও আটার মতো অন্যান্য নিত্যপণ্য চড়া দামে আটকে রয়েছে। অন্যদিকে বাজারে পণ্যের দামে বাজেটের কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি।
বাজেটের প্রভাব নিয়ে বিক্রেতারা বলেছেন, বাজেটে নিত্যপণ্য নিয়ে তেমন বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেই। যে কারণে এখনো কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে পণ্যের দাম কমাতে উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন ছিল।
আপন দেশ/এইউ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।