ফাইল ছবি
এবারের ঈদে মোট ৯০ লাখ চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। আর সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ কাঁচা চামড়া। এ চামড়ার বেশির ভাগই খাসি ও বকরির। সংশ্লিষ্টদের দাবি মূলত অদক্ষ শ্রমিক দিয়ে চামড়া ছাড়ানো, ক্রেতা কম, সংগৃহীত চামড়া সংরক্ষণে অমনোযোগ এবং ন্যায্য দাম না পাওয়ায় এমনটি ঘটেছে।
এবার চামড়া সংগ্রহের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় সেভাবে বাড়েনি। চামড়া শিল্পের প্রতি দৃষ্টি দিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে ট্যানারিশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)।
বুধবার (১৯ জুন) রাজধানীর ধানমন্ডিতে ঈদুল আজহা–পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় বিটিএ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিটিএ সভাপতি মো. শাহীন আহমেদ বলেন, গত কয়েক বছরের মতো এবারও ছাগলের চামড়া কিনতে কেউ আগ্রহ দেখাননি। ফলে বিপুলসংখ্যক ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া অদক্ষ লোক দিয়ে পশুর চামড়া ছাড়ানো এবং ঠিক সময়ে লবণ না দেয়ায় কিছু চামড়া নষ্ট হয়েছে। সব মিলিয়ে এ সংখ্যা চার থেকে পাঁচ লাখ হতে পারে।
জানা যায়, ছাগলের চামড়া প্রক্রিয়াজাতের পদ্ধতি কিছুটা আলাদা। ছাগলের চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে, এমন ৪০ থেকে ৫০টা ট্যানারি প্রতিষ্ঠান একসময় রাজধানীর হাজারীবাগে ছিল। ২০১৭ সালে সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়াশিল্প নগরীতে ট্যানারি স্থানান্তর হয়। তবে ওই সময় ছাগলের চামড়া প্রক্রিয়াজাতকারী অধিকাংশ ট্যানারি সেখানে যায়নি। বর্তমানে চামড়াশিল্প নগরীতে এ ধরনের মাত্র পাঁচ থেকে ছয়টি ট্যানারি রয়েছে। অল্প কয়েকটি ট্যানারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এত পরিমাণ ছাগলের চামড়া কেনা ও প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব হয় না। ফলে বাজারে চাহিদা কম থাকায় এ ধরনের চামড়ার উপযুক্ত দাম পাওয়া যায় না।
অন্যদিকে, ট্যানারিতে ছাগলের প্রতিটি চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে এক হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। তবে এ চামড়া বিক্রির সময় আবার ভালো দাম পাওয়া যায় না। এটিও ছাগলের চামড়া নষ্টের পেছনে আরেকটি কারণ বলে জানান বিটিএ সভাপতি। বলেন, ছাগলের চামড়া নষ্ট ঠেকাতে হলে এ জাতীয় ট্যানারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্যানারিগুলোকে অর্থায়নের মাধ্যমে পুনরায় চালুর সুযোগ দিতে পারে।
চলতি বছর কোরবানি ঈদের প্রথম দুই দিন সারা দেশে কাঁচা চামড়া লবণজাতসংক্রান্ত তথ্য সাংবাদিকদের জানান মো. শাহীন আহমেদ। তিনি বলেন, ঈদের পর সারা দেশে আনুমানিক ৯০ লাখ চামড়ায় লবণ যুক্ত করা হয়েছে। এ সংখ্যা গত বছরের কাছাকাছি।
শাহীন আহমেদ বলেন, এবারের ঈদ মৌসুমে রাজধানী ঢাকায় সব মিলিয়ে ১০ লাখের মতো চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাভারে চামড়াশিল্প নগরীতে অবস্থিত ট্যানারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি ৪ লাখ ৭৫ হাজার চামড়া লবণজাত করেছে। বাকি চামড়া সংগ্রহ করেছেন পোস্তার আড়তদার, ব্যাপারী ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন জানায়, শুরুতে রাজধানী ঢাকায় সংগৃহীত লবণযুক্ত চামড়াগুলো ট্যানারিতে প্রক্রিয়াজাত করা হবে। আর সাত দিন পর সারা দেশের বড় বড় হাট ও মোকাম থেকে লবণযুক্ত চামড়া কেনা ও প্রক্রিয়াজাত শুরু করবে ট্যানারিগুলো।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।