Apan Desh | আপন দেশ

সংসারের খরচ কমাতে আলু খেতাম, খাবো কী এখন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:১১, ২৮ জুন ২০২৪

সংসারের খরচ কমাতে আলু খেতাম, খাবো কী এখন?

ফাইল ছবি

পেঁয়াজের কেজি ১০০টাকা। দুদিন আগেও ৫৫ টাকা কেজি দরে আলু কিনেছি। এখন ৬৫ টাকা চাচ্ছে। দামদর করে ৬২ টাকায় নিলাম। আগে সংসারে খরচ কমানোর জন্য আলুই বেশি খেতাম। সেটারও যদি এত দাম হয়, খাবো কী এখন? বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন আলুর কেজি ৭০ টাকা নাকি স্বভাবিক। বাসা থেকে যে হিসাব করে বাজারে এসেছি তার অর্ধেক পণ্য কিনতে হচ্ছে। এ কথা বলব কার কাছে, শুনবেই কে? এমন করেই বলছিলেন নগরীর মালিবাগ বাজারে আসা গোলাম রহমানের। তিনি বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। এমন প্রশ্ন শুধু গোলাম রহমানেরই নয় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের কথা এটি। 

নিত্যপণ্যের কিনতে বাসা আর  বাজারে হিসাবে তাল গোলমাল পেকে যাচ্ছে। আগে সপ্তাহের ব্যবধানে জিনিসপত্রের দাম বাড়তো, এখন নিত্যপণ্যের দাম নিত্যদিনই বাড়ছে। কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টা থেকে ২৫০ টাকায় নেমেছে। কিন্তু পেয়াজের কেজি বেড়েছে ১০ টা থেকে ২০ টাকা। নিত্যপণ্য একটির দাম খানিকটা কমে তো আরেকটির দাম হু হু করে বাড়ে।এছাড়া আলুর দাম উঠেছে ৬৫ টাকা কেজি। 

শুক্রবার (২৮ জুন) রাজধানীর খিলগাঁও, মালিবাগ ও মগবাজার এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

গত সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকায়। যা এক সপ্তাহ ব্যবধানে ৫-১০ টাকা বেড়েছে। খুচরা দোকানে ভালো মানের পেঁয়াজ এখন ১০০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ মানের পেঁয়াজ ৯৫ টাকা।

ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ কম। মাত্র অল্প কয়েকটি দোকানে আমদানি করা পেঁয়াজ দেখা গেছে। আমদানি করা পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে একই দামে।

খিলগাঁও বাজারে পেঁয়াজ বিক্রেতা হারেজ মিয়া বলেন, পেঁয়াজের মৌসুম শেষের দিকে যাচ্ছে। সেকারণে দাম বাড়ছে। এ দামের শেষ কোথায় তা বলা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ কম। কারণ ভারত পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানিমূল্য ৫৫০ ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে। ওই দামে পেঁয়াজ আমদানি করলে শুল্ককরসহ দেশে আনতে প্রায় ৮০ টাকা খরচ হয়। যে কারণে ভারতের পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে না। এতে বাজার শুধু দেশি পেঁয়াজের ওপর নির্ভর করেই চলছে। যে কারণে দাম বেশি।

অন্যদিকে বাজারে বেড়েছে আলুর দামও। গত সপ্তাহে খুচরায় ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে। তবে দরদাম করলে কোনো কোনো দোকানে ৬০ টাকায় মিলছে।

মালিবাগের আনু ব্যবসায়ি লতিফুর রহমান বলেন, ৬০ টাকায় আলু বিক্রি করলে কোনো লাভ থাকে না। কারণ, পাইকারি কেনায় পড়ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে।

তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে আলুর দাম প্রায়ই ২/১ টাকা বাড়ছে। আসলে আলুর সংকট দেখা দেওয়ায় দাম বেড়েছে। মুন্সিগঞ্জ, রাজশাহী, রংপুরে আলুর খুব সংকট চলছে, পাওয়া যাচ্ছে না। এ বছর উৎপাদন কম হওয়ায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।

ঈদুল আজহার আগে আগেই এবার বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। ওই দাম এখনো তেমনটা কমেনি। কোরবানির সময়ে ঢাকায় কাঁচা মরিচের কেজি ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। কিছুটা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।

যদিও বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ দিন দিন বাড়ছে। কয়েক দিনের মধ্যে কাঁচা মরিচের দাম আরও কমে আসবে। ঈদের সময় বৃষ্টি এবং ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় কাঁচা মরিচের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছিল।

বাজারের বেশিরভাগ সবজি চড়া দামে আটকে রয়েছে। প্রতিকেজি ৬০ টাকার নিচে মিলছে না কিছু। ওই দামের মধ্যে আছে পটল, ঢ্যাঁড়স, কাঁচা পেঁপে। তবে কচুর লতি, বরবটি, কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে আরও ২০ টাকা বেশি দরে, অর্থাৎ ৮০ টাকার আশপাশে প্রতি কেজি। এছাড়া করলা ও বড় তালবেগুনের দাম ১০০ টাকা বা তার চেয়েও বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা।

ভরা মৌসুমে বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়লেও দামে খুব একটা স্বস্তি দেখা যায়নি। বড় মগবাজারে ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম আকারের ইলিশ প্রতি কেজি এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা এবং এক কেজির ইলিশ এক হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাক দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়