ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় চীন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অর্থনৈতিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ডলার ঋণসহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী। এ তথ্য জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের রাষ্ট্রীয় সফরে বেইজিংয়ে অবস্থান করছেন। বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর তিনি তার সফর শেষ করবেন।
তার আগে গণমাধ্যমকে এক ব্রিফিংয়ে অর্থনৈতিক সহায়তার এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এর আগে বেইজিংয়ের 'গ্রেট হল অব দ্য পিপল'-এ চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১টার বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপল- এ দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে এ বৈঠক হয়।
চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় চীন। এ প্রেক্ষাপটে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি।
বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশ-চীনের মধ্যে সব বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফর করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছয়টি সফর করেছেন। এর মধ্য দিয়ে যে সম্পর্কের সূচনা হয়েছিল তা স্মরণ করেন লি কিয়াং। তিনি বলেছেন, আগামী দিনগুলোতে এ সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হবে।
আগামী বছর বাংলাদেশ সফরের জন্য চীনের প্রেসিডেন্টসহ তার মন্ত্রিপর্ষিদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী যথাযথভাবে উদযাপনের ওপর দুই নেতাই গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীনের সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়াও তিনি চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ব্যবধান কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এসময় লি কিয়াংকে বাংলাদেশ থেকে চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, ওষুধ ও সিরামিক পণ্য আমদানির অনুরোধ জানান শেখ হাসিনা।
জবাবে চীনের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের আরও পণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি দেন।
বৈঠকে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা ও বিশ্বজুড়ে মানবতা সমুন্নত রাখতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।
বাংলাদেশ ও চীন আজ ২১টি সহযোগিতা নথিতে সই করেছে। এর বেশিরভাগই সমঝোতা স্মারক। দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার দিকে নজর দেয়া হয়েছে এসব নথিতে।
চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ একটি রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বরাদ্দ করেছে। এ তথ্য উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও চীনা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।
এছাড়াও ব্রিকস এর যেকোনো ফরম্যাটে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। এ অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সমর্থনের আশ্বাস দেন চীনের প্রধানমন্ত্রী।
২০২৬ সালে মধ্যম আয়ের দেশে আনুষ্ঠানিক উত্তরণের পর বাংলাদেশ যাতে কমপক্ষে তিন বছর এলডিসি সুবিধা লাভ করতে পারে। এ বিষয়ে চীনের সহযোগিতা চান শেখ হাসিনা। লি কিয়াং এতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন বলে ব্রিফিংয়ে জানান ড. হাছান মাহমুদ।
আপন দেশ/এমবি/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।