ফাইল ছবি
দেশের কৃষি খাতে ৩৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ১২ হাজার ৬১৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করবে। বাকি ২৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করবে। চলতি অর্থবছরে এ লক্ষ্য দেয়া হয়েছে দেশের বেসরকারি ও বিদেশী ব্যাংকগুলোকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন কৃষিঋণ নীতিমালায় পশুপালন খাতে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত এবং গ্রামীণ খাতে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে ডিপি নোট (সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ১০ থেকে ৫০ টাকার স্ট্যাম্প), ব্যক্তিগত জামানতপত্র (স্ট্যাম্পের প্রয়োজন নেই) ও জামানতের অঙ্গীকারনামা (লেটার অব হাইপোথিকেশন; স্ট্যাম্পের প্রয়োজন নেই) ছাড়া অন্য কোনো অঙ্গীকারপত্রের (চার্জ ডকুমেন্টস) প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন ঋণ নীতিমালা প্রকাশ করা হয়। এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এ নীতিমালার ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৩৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ছিল। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলো ৩৭ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করেছে। ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ব্যাংকগুলোকে নিজস্ব নেটওয়ার্ক (শাখা, উপশাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং, দলবদ্ধ ঋণ বিতরণ) ও ব্যাংক-এমএফআই লিংকেজ ব্যবহার করতে পারবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ৫০ শতাংশের কম হতে পারবে না।
এবার মোট লক্ষ্যমাত্রার ৬০ শতাংশ শস্য ও ফসল খাতে, ১৩ শতাংশ মৎস্য খাতে এবং ১৫ শতাংশ প্রাণিসম্পদ খাতে ঋণ বিতরণ করতে হবে।
ব্যাংকগুলোর কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার অনর্জিত অংশ কৃষি খাতেই বিনিয়োগের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট কমন ফান্ড (বিবিএডিসিএফ) নামে একটি ফান্ড গঠন করেছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ ব্যাংকগুলোর অনর্জিত অংশ এ ফান্ডে জমা করতে হবে। এ জমাকৃত অর্থের বিপরীতে তাদের ২ শতাংশ হারে সুদ দেয়া হবে। এ কমন ফান্ডে জমাকৃত অর্থ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকারী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালার আওতায় গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করা হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতি বছরই কৃষি খাতসংশ্লিষ্ট নিত্যনতুন বিষয় নিয়ে কৃষি ও গ্রামীণ ঋণ নীতিমালা তৈরি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এবারের নীতিমালায় উল্লেখযোগ্য সংযোজনগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষি ও গ্রামীণ ঋণের সুযোগ বাড়াতে শজিনা, মুর্তা, পেরিলার মতো নতুন নতুন ফসল আবাদ ও উৎপাদন এবং মৎস্য খাতে শুঁটকি ও ঝিনুক প্রক্রিয়াকরণকে এ ঋণ নীতিমালার আওতায় আনা হয়েছে। সংযোজিত হয়েছে কৃষি উৎপাদনে ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতির আওতায় শরিয়াহভিত্তিক বিনিয়োগ পদ্ধতি।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।