Apan Desh | আপন দেশ

ভারতের অর্থনীতিতে ঝাকুনি দিল ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ২ নভেম্বর ২০২৪

ভারতের অর্থনীতিতে ঝাকুনি দিল ড. ইউনূস

ফাইল ছবি

দুই মাস আগেও ভারতের পোশাক রফতানি বাজার ছিল রমরমা। পোশাক রফতানি ১১.৯ শতাংশ থেকে এক লাফে ১৭.৩ শতাংশে পোঁছে দেশটি। নেপথ্যে প্রথমে ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা। এরপর যোগ হয় শ্রমিক অসন্তোষ। সম্প্রতি ভারতের বিমান ও নৌবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক রফতানি বন্ধ করেছে বাংলাদেশ। এখন বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্য রফতানি হচ্ছে মালদ্বীপ হয়ে। এতে দুই বন্দরের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে ভারত। অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস সরকারের কঠোর সিদ্ধান্তে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে ভারতের অর্থনীতিতে। 

বাংলাদেশের পোশাক খাতে শ্রমিক অসন্তোষ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে রফতানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত। অর্থনীতিবিদের মতে, বাংলাদেশের সংকটে সুযোগ নিচ্ছে ভারত। বিশ্বে বাংলাদেশের বাজারগুলোতে ধীরে ধীরে দখল নিচ্ছে প্রতিবেশী দেশ। আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের উপস্থিতি শক্তিশালী করে তুলেছে। দ্রুত পণ্য সরবরাহ করে ক্রেতাদের আস্থায় নিচ্ছে। আর বাজার হারাচ্ছে বাংলাদেশ। পোশাক রফতানির দৌড়ে এখন অনেক এগিয়ে ভারত।  

আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ভারতের পোশাক রফতানি ১১.৯ শতাংশ থেকে ১৭.৩ শতাংশ পৌঁছে। যা গত কয়েক বছরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। সেপ্টেম্বরে ভারত ২০০-২৫০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত অর্ডার পেয়েছে। এতে দেশটির অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ থেকে পণ্য ক্রেতারা এখন ভারতীয় পণ্যে কিনছেন।

অন্যদিকে বাংলাদেশ আগস্টে পোশাক রফতানিতে আয় করে ৪.৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে সেপ্টেম্বরে তা কমে ৩.৫১ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। এতে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়। ফলে বাংলাদেশে অপেক্ষা করে ক্রেতারা ভারত থেকে পণ্য কিনে।

দুই বন্দর না ব্যবহার করা প্রসঙ্গে ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশ এখন তৈরি পোশাক জাহাজে করে প্রথমে মালদ্বীপে পাঠাচ্ছেন। এরপর সেখান থেকে বিমানে করে বিশ্বব্যাপী পৌঁছাচ্ছে। এতে ভারতের নৌ ও বিমানবন্দর বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম লাইভমিন্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমএসসি এজেন্সি (ইন্ডিয়া) প্রাইভেট লিমিটেডের মহাপরিচালক দীপক তিওয়ারি বলেন, বাংলাদেশ ভারতীয় বিমানবন্দরের মাধ্যমে পণ্য পরিবহণ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ভারতীয় কার্গো থেকে রাজস্ব হারাচ্ছে। বাংলাদেশের এ সিদ্ধান্তের ফলে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সম্পর্ক দুর্বল হয়ে যেতে পারে। 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, লজিস্টিক ও কাঠামোগত প্রকল্পে সহযোগিতাপূর্ণ সুযোগগুলো শঙ্কায় পড়তে পারে। তবে ভারত সরকার একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজছে। যা ভারত হয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্যের রফতানিকে নিশ্চিত করবে। এতে করে ভারতের স্বার্থ রক্ষা পাবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের পদক্ষেপটি ভারতের বিরুদ্ধে কোনো রাগ বা বিরাগ থেকে নেয়নি। বরং তারা নিজেদের সাপ্লাই চেইনের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও ভারতীয় বন্দরের মাধ্যমে পণ্যের দ্রুত সরবরাহ নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

ভারতের অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের নির্বাহী সদস্যরা বলেছেন, ভারতীয় বন্দরগুলো ইতোমধ্যেই অনেক ব্যস্ত। তাই বাংলাদেশি পণ্যের রফতানি বন্ধ করার বিষয়ে আগেই ভারত সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল।

বাংলাদেশের পোশাক রফতানি খাতে ঐতিহাসিকভাবে শক্তিশালী অবস্থান ছিল। তবে এখন পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বাংলাদেশ শ্রমিক অসন্তোষের সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তবে তারা পোশাক রফতানির বাজারে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়