ইউনিয়ন ব্যাংকের পান্থপথ, ঢাকা শাখায় ভিড় করছেন গ্রাহকরা। ছবিটি বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় তোলা - আপন দেশ
ছাত্র জনতার বিপ্লবে সরকার পতনের পর দেশে অনেক ক্ষেত্রেই পরিবর্তন এসেছে। বিভিন্ন সেক্টরে চলছে সংস্কার কার্যক্রম। কিন্তু ব্যাংক সেক্টরে দুর্দশা যেন আরও বেড়েছে। বেশ কয়েকটি ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের গচ্ছিত টাকা দিতে পারছেনা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা।
গত ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ সরকার। দীর্ঘ এ সময়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম ব্যাংক সেক্টর। এক এস আলম ও তার পরিবারের দখলেই ছিল অন্তত সাতটি ব্যাংক। তারমধ্যে অন্যতম ইউনিয়ন ব্যাংক।
ব্যাংকটির বিভিন্ন শাখায় ঘুরে ঘুরেই টাকা তুলতে পারছেন না গ্রাহকরা। তেমনই এক গ্রাহক রেজাই রাব্বী। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এ তরুণ পড়ালেখার পাশাপাশি একটি গণমাধ্যমে চাকরি করেন। তার স্যালারি অ্যাকাউন্ট ইউনিয়ন ব্যাংকের পান্থপথ শাখায়। বেতনের টাকা তুলতে চেক নিয়ে তৃতীয় দিনের মতো বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ব্যাংকটিতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু টাকা না পেয়ে ফিরে এসেছেন।
প্রসঙ্গ নিয়ে রাব্বী বলেন, বাসাভাড়া দিতে হবে তাই ব্যাংকে এসেছিলাম টাকা তুলতে। কিন্তু তুলতে পারলাম না। কাউন্টার থেকে বলা হচ্ছে টাকা নেই। আগামী (রোববার) আসেন চেষ্টা করব দেয়ার জন্য।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অফিস আমাদের বেতন দিয়েছে। সে বেতনের টাকা তুলতে পারছি না। এটা কেমন কথা হল। আমাদের অপরাধ কি? যারা লুটপাট করেছে তাদের সম্পদ বেঁচে টাকা ব্যাংকে দেয়া হচ্ছে না কেন?
আরিফুল ইসলাম নামের এক গ্রাহক বলেন, ব্যাংকে আমার ১১ লাখ টাকা রয়েছে। আজ আমার দরকার ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু তিন দিন ঘুরে আজ তুলতে পারলাম ৫ হাজার টাকা। এভাবে আর কত দিন ভোগান্তির শিকার হবো? কবে নাগাদ সমাধান পাব আমরা? শুধু রাব্বী কিংবা আরিফুল নন তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকটির বেশিরভাগ শাখাই গ্রাহকদের টাকা দিতে পারছে না।
তসলিম উদ্দিন তুষারের ভাই দুবাই থেকে ১ লাখ টাকা পাঠিয়েছে তার পরিবারের খরচের জন্য। কিন্তু ব্যাংক তাকে এক দিন পরপর ৫ হাজার করে টাকা দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমার বাবা অসুস্থ। তার চিকিৎসার জন্য ভাই বিদেশে থেকে টাকা পাঠিয়েছেন। কিন্তু ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় টাকা তুলতে পারছি না। একদিন পরপর ৫ হাজার করে টাকা দিচ্ছে তারা।
তুষার বলেন, নিজের টাকা যদি প্রয়োজনের সময় না পাই তাহলে কেমন লাগে বলেন। এ দুঃখের কথা কাকে বলব। আমার দাবি রইল যারা ব্যাংকের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছেন তাদের যেন ধরে শাস্তি দেয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, তারল্যসংকটের কারণে সাময়িক এ সমস্যা হয়েছে। আশা করি শিগগিরই মিটে যাবে। এসময় পর্যন্ত গ্রাহকদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে। গ্রাহকদের কাছে সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন তিনি।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।