ফাইল ছবি
গাজীপুরের পদ্মা শাতিল আরব ফ্যাশন্স লিমিটেড কারখানায় কাজ করেন ২৬ বছর বয়সী ইয়াসমিন লাবণী। প্রায় ৩ হাজার শ্রমিকের কর্মস্থল এ কারখানা। এখানের তৈরি পোশাক সরবরাহ করা হয় অস্ট্রেলিয়ার ফ্যাশন রিটেইলার মোজাইকের কাছে। কিন্তু সম্প্রতি মোজাইক দেউলিয়া ঘোষণা করার পর লাবণীর মতো হাজারো শ্রমিকের জীবন সংকটে পড়েছে।
মোজাইকের কাছে বাংলাদেশের ২৩টি কারখানার মোট ৩ কোটি ডলার পাওনা রয়েছে। এর মধ্যে পদ্মা শাতিল আরব ফ্যাশন্সের পাওনা ২৫ লাখ ডলার। এভাবে বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় শ্রমিকদের বেতন আটকে রয়েছে। এত বিশাল বকেয়ার কারণে হাজার হাজার শ্রমিকের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে।
লাবণী বলেন, বেতন না পাওয়ায় সন্তানদের জন্য খাবার, চিকিৎসা খরচ সবকিছু কঠিন হয়ে পড়েছে। মালিকেরা সর্বোচ্চ কয়েকজনকে বেতন দিতে পারবেন। বাকিদের কী হবে?
পদ্মা শাতিল আরব ফ্যাশন্সের পরিচালক জাবেদ আহমেদ জানান, তারা জুন মাস থেকেই পাওনা পরিশোধের জন্য মোজাইককে চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু মোজাইক বিক্রি কমে যাওয়ার অজুহাত দেখাচ্ছে।
কারখানার ম্যানেজাররা বলছেন, যদি মোজাইক তাদের পাওনা পরিশোধ না করে তাহলে শ্রমিকদের চাকরি হারানো ছাড়াও ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। অনেক মালিক মনে করছেন, মোজাইকের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন বাড়ানোর পরেও এখন বড় ছাড় দিতে বলার মধ্যে প্রতারণা রয়েছে।
মোজাইক কোম্পানির অধীনে ৯টি ফ্যাশন ব্র্যান্ড রয়েছে। যাদের মধ্যে কিছু ব্র্যান্ড কার্যক্রম বন্ধ করেছে। কোম্পানি পুনর্গঠন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। তবে অস্ট্রেলিয়া হাই কমিশন জানাচ্ছে, মোজাইক এখনো তাদের বকেয়া পরিশোধ করেনি। যা অস্ট্রেলিয়ার ভাবমূতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিবছর ৩৪ বিলিয়ন ডলার আয় করে। যা দেশের রফতানি আয়ের ৮৫ শতাংশ। পোশাক শ্রমিকদের জন্য এ অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আরও শোষণের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।