বাজারে উঠেছে নতুন পেঁয়াজ ও আলু
টানা কর্ম ব্যস্ততার মাঝে একটু স্বস্তির পরশ মেলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে নাস্তা সেরে সোজা বাজারে। কিন্তু হতাশ হতে হয় লাগামহীন দ্রব্যমুল্যে। শেষমেশ চাহিদা পুরণ না করেই ফিরতে হয় বাসায়। বলছিলাম মো. মুহিন খানের কথা। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখার সময় মুগদা বউ বাজারে দেখা হয় তার সঙ্গে।
পত্রিকা বিক্রির পাশাপাশি ঔষধের দোকানে চাকরি করেন মুহিন। তিনি বলেন, মাস শেষে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। বাজারে গেলে মাথা গরম হয়ে যায়। পরিবারের চাহিদামত বাজার করতে পারি না। সব কিছুর দাম বাড়তি। শীতের আগমনেও তুলনামুলক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। বিশেষ করে আলুর দামটা অনেক বেশি। দেখার যেন কেউ নেই।
এদিন রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের তুলনায় পেঁয়াজ, সবজি ও মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা কমেছে। এছাড়া শীতের সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় কমেছে দাম। একই সঙ্গে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে মুরগির দাম। তবে এখনও চড়া আলু ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম।
ক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। এখনই সময় আমদানি করে সরবরাহ বাড়ানোর। তাহলে দাম এমনিতেই কমে আসবে। সাব্বির হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, ভারত, পাকিস্তান ও মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি বাড়াতে হবে। দাম কমাতে এর বিকল্প নেই।
খুচরা বাজারে মানভেদে আলু বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৫ টাকায়। সেই হিসাবে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
আলুর দাম বৃদ্ধির কারণ জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে বাজারে আলুর দাম বাড়তি। হিমাগার থেকেই এখনও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে পণ্যটি। ফলে আলুর দাম কমছে না। অন্যদিকে, কৃষকের ছোট পেঁয়াজসহ পেঁয়াজপাতা বাজারে আসতে শুরু করেছে। সরবরাহ বাড়ায় কমেছে পেঁয়াজের দাম।
কমলাপুর কাঁচা বাজারে এক ক্রেতা বলেন, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে একসময় আলুই ছিল গরিবের ভরসার জায়গা। তবে সিন্ডিকেট করে আবারও আলুর বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। তবে সরকার নজরদারি বাড়ালে এ দাম কমতে পারে।
কৃষকের শীতকালীন সবজি বাজারে আসায় সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দামও কমতে শুরু করেছে। তিন সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি শিম ২৩০-২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। আজ ১০০-১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০-৬০ টাকা, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৪০-১৬০ টাকা, মুলা ৫০-৬০ টাকা, শালগম ১০০ টাকা, বেগুন ৮০-১২০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০-৮০ টাকা ও লাউ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্যান্য সবজি ও শাক আগের দামে স্থিতিশীল রয়েছে
বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন ও পাম তেল। খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৭০ থেকে ১৭২ টাকা ও খোলা পাম তেল ১৬২-১৬৩ টাকায় বিক্রি হয়। এক মাসের ব্যবধানে খোলা সয়াবিনের দাম লিটারে ১৬-১৭ টাকা ও খোলা পাম তেলের দাম ১৩ টাকা বেড়েছে।
এসব বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৮৫ টাকায়। বেশ কিছুদিন ধরেই পণ্যটি ১৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছিল। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে সোনালি মুরগির দাম। ডিমের ডজন চড়া দাম ১৫০ টাকায় স্থির থাকলেও কোথাও কোথাও পাঁচ টাকা কমে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।