আগারগাঁও পর্যটন ভবনের সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ছবি-আপন দেশ
আইন মেনে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে কর কাঠামোকে প্রধান বাধা হিসেবে দেখছেন ৫৭ শতাংশ এসএমই উদ্যোক্তা। আর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন পদ্ধতিকে বাধা মনে করেন ৫৪ শতাংশ উদ্যোক্তা। ট্রেড লাইসেন্সের অতিরিক্ত ব্যয়কে বাধা হিসেবে দেখছেন ৫১ শতাংশ উদ্যোক্তা।
শতকরা ৪৪ ভাগ উদ্যোক্তা বলছেন, সরকারি আইন-কানুনের জটিলতাও আইন মেনে ব্যবসা করায় অন্যতম বাধা। শিল্প মন্ত্রণালয়ের দপ্তর এসএমই ফাউন্ডেশনের গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
রোববার (২৩ নভেম্বর) আগারগাঁও পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং জার্মান উন্নয়ন সংস্থা এফইএস বাংলাদেশের অনানুষ্ঠানিক এসএমই খাত নিয়ে সেমিনারে এক গবেষণার এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
সেমিনারে তথ্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মেলিতা মেহজাবিন। এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা। বক্তব্য প্রদান করেন এফইএস, বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি ড. ফ্লিলিক্স গার্ডেস এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলও বাংলাদেশের প্রোগ্রাম হেড গুনজান ডালাকটি।
মূল প্রবন্ধে গবেষণার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে আরো বলা হয়, দেশের ৭৪ শতাংশের বেশি এসএমই উদ্যোক্তারা সরকারের আইন-কানুন মেনে ব্যবসা করতে চান। তবে এক্ষেত্রে সরকারের নিয়ম-কানুন সহজ করা বা ওয়ান স্টপ সেবা চালু, জামানত বিহীন ঋণ এবং আইন মেনে ব্যবসা করার সুবিধা বাড়ানো দরকার। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহীর ৩০৪ জন উদ্যোক্তার ওপর এ গবেষণা পরিচালিত হয়।
উদ্যোক্তারা জানান, আইন মেনে ব্যবসা করতে ইন্ডিয়া সরকারের বিভিন্ন দফতরের মাত্র ৭টি সনদের দরকার হলে বাংলাদেশে অন্তত ৩৪টি দপ্তর থেকে সনদের দরকার হয়। ২০১৩ সালের পরিসংখ্যান ব্যুরো’র অর্থনৈতিক জরিপ অনুসারে দেশের ৭৮ লাখের বেশি সিএমএসএমই প্রতিষ্ঠানে প্রায় আড়াই কোটি মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগই অনানুষ্ঠানিক বা সরকারের আইন-কানুন ও কর কাঠামোর বাইরে। এ অবস্থায় এসব প্রতিষ্ঠানকে আইন-কানুন ও কর কাঠামোর আওতায় আনতে একটি সামগ্রিক কৌশলপত্র তৈরি, ধাপে ধাপে আনুষ্ঠানিকীকরণ, নিয়ম-কানুন সহজীকরণ এবং উদ্যোক্তাদের আর্থিক ও অ-আর্থিক প্রণোদনা দিতে সরকারের প্রতি সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সেমিনারে এসএমই উদ্যোক্তা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতর, এসএমই চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, গবেষক, অর্থনীতিবিদ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনগণ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, এসএমই ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়ন। সরকারের জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২, এসএমই নীতিমালা ২০১৯, জাতিসংঘের এসডিজি ২০৩০ এবং সরকারের নির্দেশনা অনুসারে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগী দেশের প্রায় ২০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।