চার ব্যাংকের ফাইল ছবি
দেশের সমস্যাগ্রস্থ চারটি ব্যাংককে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশেষ সহায়তা হিসেবে ন্যাশনাল, ফার্স্ট সিকিউরিটি, গ্লোবাল ও ইউনিয়ন ব্যাংককে সোমবার (২৬ নভেম্বর) এ টাকা দেয়া হয়েছে। এ অর্থ দিয়ে কেবল আমানতকারীদের চাহিদা মেটাতে পারবে ব্যাংকগুলো। ঋণ কিংবা পরিচালন ব্যয় মেটাতে পারবে না।
আমানতকারীদের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এ অর্থ ধার দিল। এক্ষেত্রে পূর্বের অবস্থান থেকে সড়ে এসেছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। অন্তর্বর্তী সরকার আমলে এটিই কোনো ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সরাসরি আর্থিক সহায়তা।
দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বাজারে নগদ অর্থ সরবরাহ না করার নীতিতে অটল ছিলেন বর্তমান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি এতদিন চেষ্টা করেছিলেন, অন্য ব্যাংক থেকে টাকা ধার দিয়ে সমস্যাগ্রস্থ ব্যাংকগুলোকে টেনে তোলার। তাতেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় নিজের অবস্থান বদলালেন গভর্নর।
আরও পড়ুন<<>> বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ নেতা কাজী ওয়াহিদ হচ্ছেন রূপালী ব্যাংকের এমডি!
বাংলাদেশ ব্যাংক ও ধারগ্রহীতা ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রয়োজন বিবেচনায় একেক ব্যাংককে একেক অংকের সহায়তা দেয়া হয়েছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে ৫ হাজার কোটি টাকা ও ন্যাশনাল ব্যাংককে ৪ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংককে ৪ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা করে দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আপন দেশ’কে বলেছেন, এ সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা আমরা সরাসরি ব্যাংককে দিয়ে দেইনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক হলো ব্যাংকগুলোর ব্যাংক। এখানে প্রতিটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষিত এ একাউন্টে সোমবারেই আমরা টাকা জমা করে দিয়েছি। এ অর্থ ব্যাংকগুলোর রিজার্ভ ফান্ড হিসেবে ব্যাবহার হবে।
আরও পড়ুন<<>> বিতর্কিত দুই ডেপুটি গভর্নরের কারিশমা, ঝুঁকিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
এ অর্থ ব্যাংক চারটির গ্রাহক কীভাবে পাবে সেটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, কোনো গ্রাহক তার পাওনাদারকে চেক দিয়েছে। ওই পাওনাদার তার নিজের অ্যাকাউন্টে যখন এ চেক জমা দেবে তখন ক্লিয়ারিং হাউজের মাধ্যমে বা আরটিজিএস এর মাধ্যমে তার টাকা পেয়ে যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক আরটিজিএস এর মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করে দিবে। এতে করে এতদিন ব্যাংক চারটির আরটিজিএস সেবা বন্ধ থাকলেও সেটি চালু করতে পারবে এবং গ্রাহক লেনদেন করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, আমানতকারীদের দৈনন্দিন নগদ উত্তোলনের চাহিদাও ব্যাংকগুলো ধাপে ধাপে এখান থেকে মেটাতে পারবে। তবে পুরো টাকা ব্যাংক একবারে বাজারে ছাড়তে পারবে না। এতে মূল্যস্ফীতির ওপর খুব একটা চাপ পড়বে না বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন<<>> ন্যাশনাল লাইফের সাড়ে চারশ’ কোটি টাকা মোরশেদের পেটে
বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আপন দেশ’কে বলেছেন, এ অর্থ ব্যাংকগুলো কিভাবে ব্যবহার করছে আমরা তা পুরোপুরি তদারকি করবো। আমরা টাকা দিয়েছি শুধু আমানতকারীদের প্রয়োজন মেটাতে। এখান থেকে একটি টাকাও যাতে ঋণ বা অন্য কোনো খাতে না যায় সেটা আমরা নিশ্চিত করতে বলেছি ব্যাংকগুলোকে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।