Apan Desh | আপন দেশ

‘বেক্সিমকো, এস আলমের অ্যাসেট না দেখেই ঋণ দিয়েছে ব্যাংক’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:৫০, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১৭:১৩, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

‘বেক্সিমকো, এস আলমের অ্যাসেট না দেখেই ঋণ দিয়েছে ব্যাংক’

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবীর খান।

বেক্সিমকো, এস আলমের মতো প্রতিষ্ঠানের অ্যাসেট না দেখেই ফাঁকা ব্যালান্সশিটে ব্যাংকগুলো ঋণ দিয়েছে। এ মন্তব্য করেছেন জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক সেমিনারে এ কথা জানান তিনি।

ফাওজুল কবির খান বলেন, ব্যাংকগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ব্যালান্সশিট দেখে ঋণ অনুমোদন করে। অ্যাসেট (সম্পদ) বিশেষ দেখে না। আর সিদ্ধান্ত নেয় লাঞ্চ ও ডিনারে বসে। 

তিনি আরও বলেন, বেক্সিমকো-এস আলমদের ক্ষেত্রে ব্যালান্সশিট দেখে ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। অ্যাসেট দেখা হয়নি। ফলে এখন তাদের অ্যাকাউন্টে কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। সবই ফাঁকা।

উপদেষ্টা বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের নতুন নীতিমালা করা হচ্ছে। সেখানে প্রকল্পের জমি, আন্তঃসংযোগ ব্যবস্থা সরকার দেবে। উদ্যোক্তারা শুধু প্লাগ অ্যান্ড প্লে করবেন। রেল, সড়কসহ সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অব্যবহৃত জমি নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে।

তবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের ইক্যুইপমেন্টে আমদানি শুল্ক কমানো হবে না। স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প গড়ে তোলার জন্য সরকার এ খাতে শুল্ক রাখবে বলে জানান তিনি। 

উপদেষ্টা আরও বলেন, আইপিপি নীতি থেকে সরকার সরে এসে মার্চেন্ট পাওয়ার পলিসি করছে। যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী তার ক্রেতা খুঁজে নেবেন। বর্তমানের মতো সরকারই একমাত্র ক্রেতা হবে না। তবে উৎপাদকরা ফি পরিশোধ করে সরকারের বিতরণ ও সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করতে পারবেন। নতুন যেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে, সেখানে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ২০ শতাংশের ক্রেতা হবে সরকার। এতে সরকারের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের চাপ কমে আসবে।

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির প্রধান সমস্যা সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার অভাব। এজন্য আমরা সব উন্মুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন আর সরকারের সাথে ব্যবসা করার জন্য মন্ত্রী, সচিবদের আত্মীয় হওয়া লাগবে না, চেনাও লাগবে না।

জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের উদ্যোক্তাদের মতো সাধারণ উদ্যোক্তারা এ ধরনের লাঞ্চ বা ডিনারে যেতে পারেন না। ফলে তাদের জন্য ঋণ পাওয়া সহজ হয়না। ব্যাংকগুলোকে সম্পদ বিবেচনা করে ঋণ অনুমোদন করার পরামর্শ দেন উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানে সিপিডির গবেষণা পরিলাচক খন্দকার গোলদম মোয়াজ্জেম বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে অর্থায়ন সহজ করতে হবে, বিশ্বব্যাপী ১৮ ধরনের ঋণ ইনস্ট্রুমেন্ট যেন অনুসরণ করা হয়। বাংলাদেশে শুধু মাত্র নন-কনসেশনাল ঋণ দেয়া হয়। ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্ট্রুমেন্ট বাড়াতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ আসার পথ সুগম করতে হবে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চের চেয়ারপার্সন গৌরাঙ্গ নন্দী। তিনি সহজে অর্থায়নের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠনের প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত বাড়তি বিদ্যুৎ সরকারের কাছে বিক্রির ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেন। 

সেমিনারটি আয়োজনে সহায়তা করেছে সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চ, কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল একশন নেটওয়ার্ক (ক্লিন) ও বিডাব্লিউজিইডি। 

ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দ্য সিটি ব্যাংকের চিফ ইকোনমিস্ট ও কান্ট্রি বিজনেস ম্যানেজার মো. আশানুর রহমান, ক্লিন-এর চিফ এক্সিকিউটিভ হাসান মেহেদী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা।

আপন দেশ/এসএমস

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়