ফাইল ছবি
গত সাড়ে ১৫ বছরে শেখ হাসিনা বিস্ময়কর দুর্নীতি করেছে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ৩ টার্মে দেশের জনগণ দেখেছে ছোট, মাঝারি ও মেগা প্রকল্পের হিড়িক। তবে এসব প্রকল্পের অনেকগুলো নিয়ে প্রশ্ন ছিল জনমনে।
অভিযোগ ছিল, প্রকল্পগুলোর অনেকই বাস্তবতা ও জনস্বার্থ বিবেচনা না করে কেবল লুটপাটের উদ্দেশ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
দেখা গেছে, বেশিরভাগ উন্নয়ন প্রকল্পে হয়েছে পুকুর চুরি। রাজনৈতিক চাঁদাবাজি, ঘুষ ও মূল্যস্ফীতির কাছে হার মেনেছে বাজেট। গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় একাধিক সময়ে অস্থিতিশীল হয়েছে পণ্যের বাজার।
অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংক খাতের লুট হওয়া অর্থ দিয়ে তৈরি করা যেত ২৪ পদ্মা সেতু। বিশ্লেষকরা বলেন, সংস্কারমূলক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে তছনছ হওয়া অর্থনীতিকে টেনে তুলতে হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উন্নয়ন প্রকল্পে নয়-ছয়ের কারণে ব্যয় বেড়েছে শতকরা ৭০ ভাগ। প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, বাস্তবায়ন না হওয়ার আগেই অর্থ ছাড়, নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে পাথর স্থাপন বা ফিতা কেটে তছরুপ করা হয় অর্থ। অর্থাৎ দৃশ্যমান একটি আনুষ্ঠানিকতা জানান দেয়াই ছিলো এসবের মূল লক্ষ্য।
সম্পদ ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে প্রকল্পগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিলো, সেসব প্রকল্পে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। প্রকল্পগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে আসল উদ্দেশ্য ছিলো কোনো গোষ্ঠিকে সেখান থেকে অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেয়া। একাধিকবার একই প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়িয়ে সে বিশেষ গোষ্ঠিকে সুবিধা করে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক কৌশলগুলোকে পুনরায় ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। এর ফলে যেসব জায়গায় বড় মাপের ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হতে পারে। ব্যাংক খাতে অর্থ লুটপাট বন্ধে সেগুলোর আগের পরিচালনা পর্ষদও ভেঙে দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উঠে আসে ব্যাংক খাতের হরিলুট অবস্থা। বলা হয়, ব্যাংক খাত ভঙ্গুর করেছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। এ খাতে লোপাট হওয়া অর্থে ১৪টি মেট্রোরেল অথবা ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব। ঋণ খেলাপি ও আর্থিক অনিয়ম নষ্ট করেছে আর্থিক স্থিতিশীলতা। ব্যহত হয়েছে উৎপাদনশীলতা। বছরে পাচার হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পদ্ধতিগত কর ফাঁকি, ছাড়ের অপব্যবহার ও দুর্বলভাবে কর প্রশাসন পরিচালনায় রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে রাষ্ট্র। গেল ১ দশকে ভিসা ক্রয়, রিক্রুটিং এজেন্সির হুন্ডিতে পাচার হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা। যা দিয়ে ৪টি ঢাকা এমআরটি-৬ (মেট্রোরেল) উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণ সম্ভব।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।
