বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গ্রামীণ ফোনের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত শ্রমিক-কর্মকর্তারা। ছবি- আপন দেশ
গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে টানা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির চাকরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) ফের গ্রামীণফোনের সামনে অবস্থান নেবে তারা।
সোমবার (০২ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকেল ৫টা নাগাদ চাকরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে তারা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে।
এ সময় তিন দফা দাবি উপস্থাপন করে তারা। এর মধ্যে রয়েছে, অবৈধভাবে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহাল ও তাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা, শ্রমিকদের সকল বকেয়া অর্থ দ্রুত পরিশোধ করা ও শ্রমিকদের উপর নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ ও স্বৈরাচারের দোসরদের শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
এর আগে দিনভর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গ্রামীণ ফোনের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন শতশত শ্রমিক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী। সকাল থেকেই চাকরিচ্যুতরা হাতে প্ল্যাকার্ড ব্যানার ও ফেষ্টুন নিয়ে জিপির সামনে দাঁড়ায়।
প্লাকার্ডে লিখা ছিল- ‘সকল চাকরিচ্যুতদের ফিরিয়ে নাও’, ‘ন্যায্য পাওনা চাই কারো দয়া নয়’, ‘পে আওয়ার অল ডিউ’ ইত্যাদি স্লোগান।
নামাজের বিরতির পর ফের অবস্থানে বসেন বঞ্চিতরা। টানা বিকেল ৫টা নাগাদ তা পালন করেন। এ সময় দাবি-দাওয়া, তাদের প্রতি জিপির কর্মকর্তাদের নিপীড়নমুলক আচরণ, নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিতের ঘটনা বর্ণনা করেন।
আরও পড়ুন<<>> গ্রামীণফোনে অবৈধভাবে সাড়ে ৩ হাজার ছাঁটাই, শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি
বক্তরা বলেন, গ্রামীণফোনের স্থায়ী কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতির একটা নাটক আছে। রাত ১২টায় একটা ই-মেইল পাবেন, ‘ইউ আর নো মোর’। মারা গেছেন না কি চাকরি হারিয়েছে-কোনটা বুঝবেন তা জানি না। সকালে অফিসে আসবেন দেখবেন ঢুকতে দেবে না। এভাবে মানা যায় না। এ অবস্থায় চলছে দেশের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানটি। চাকরিচ্যুত করা মানে ‘গণহত্যা’ দাবি করে বক্তরা বলছেন, ২০১০ সাল থেকে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে কথায় কথায় চাকরিচ্যুত করছে।
এ প্রক্রিয়াতেই গ্রামীণফোন পতিত স্বৈরাচারের দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীদের প্রভাব খাটিয়ে, আদালতের আইন প্রক্রিয়াকে অসৎ উদ্দেশ্যে দীর্ঘায়িত করে এবং শ্রম আইন, মানবাধিকার ইত্যাদি অমান্য করে প্রায় ৩৪৬০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করেছে। এ ঘৃণ্য কাজে স্বৈরাচারী পতিত চক্রের ঘনিষ্ঠ। চিহ্নিত কর্মকর্তা জড়িত। ২০২২-২৩ সালেই মেধাবী বেশিরভাগ কর্মকর্তাদের ছাঁটাই করা হয়েছে অভিযোগ করেন তিনি।
বিকেল ৫টায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন চাকরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক আবু সাদাত মো. শোয়েব।
তিনি বলেন, আজ প্রথম কর্মসূচি পালন করছি। আশা রাখব গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবিগুলো আমলে নেবে। প্রয়োজনয়ীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তা না হলে আগামীকাল মঙ্গলবার ফের গ্রামীণফোনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলবে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৬টা নাগাদ কর্মসূচিতে আবারো দাবির কথা তুলে ধরা হবে। এতেও জিপির টনক না নড়লে বৃহত্তর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।
এর আগে বক্তব্য দেন, আন্দোলনরত সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন চৌধুরী ও মো. খালিদ হাসান, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. শাহরিয়ার শিশির, মো. সাহেদ আলী প্রমুখ।
গ্রামীণফোনের ব্যাখ্যা
গ্রামীণফোন জানায়, গ্রামীণফোনের প্রাক্তন কয়েকজন কর্মী কিছু দাবি নিয়ে এখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। গ্রামীণফোন দেশের সকল আইন মেনে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে। তাদের দাবির বিষয়গুলো আদালতে বিচারাধীন আছে।
আপন দেশ/এবি/এসএমএস
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।