ছবি : আপন দেশ
শীতকালীন নানারকম সবজিতে ভরপুর রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো। তরতাজা এসব সবজি দেখে যেমন প্রাণ জুড়িয়ে যায়, তেমনি দামও রয়েছে নাগালের মধ্যেই। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই নিম্নমুখী সবজির বাজার। তবে ভরা মৌসুমে অস্থির চালের বাজার। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন সিন্ডিকেটের কারসাজিতে চালের দাম বেড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা। সে সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে মুরগির দামও। মাছের বাজারও অস্থিতিশিল।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজারঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। কমলাপুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার, ককসহ প্রায় সব ধরণের মুরগীতেই ১০-২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লাম ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২১০-২২০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও সোনালি মুরগিতে ১০-২০ টাকা বেড়ে ৩৬০-৩৭০ টাকা কেজি হয়েছে, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৫৬০-৫৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
চলতি সপ্তাহে মাছের বাজার চড়া রয়েছে। সব ধরনের মাছ কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এসব বাজারে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ১১০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ১৭০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ২০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক কেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা , মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, চাষের পাঙ্গাস ২০০ থেকে ২৩০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ১২০০ টাকায়, বোয়ালমাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়, বড় কাতল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকায়, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রুপচাঁদা ১২০০ টাকা, বড় বাইম মাছ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, সোল মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা, কোড়াল মাছ ৭০০ টাকা, কাজলি মাছ ৮০০ টাকা এবং কাইকলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে কাচাঁ বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি টমেটো ৬০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, ফুলকপি ২৫-৩০ টাকা, বাধা কপি ৪০ টাকা, পিঁয়াজের কালি ১৫ টাকা আটি, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, সিম প্রকার ভেদে ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা মিষ্টি কুমড়া মাঝাড়ি আকাড়ের প্রতি পিস ৬০টাকা, কাঁচা মরিচ কেজি ৮০ টাকা, লাউ আকারভেদে প্রতি পিস ৫০-৬০, কালো বেগুন ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, সাদা বেগুন ৬০ টাকা,বরবটি ৮০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, শশা ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে আলুর দাম। গত সপ্তাহে ৫৫-৬০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া আলু ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজি ব্যবসায়ী আলিফ বলেন, শীতের সবজির প্রচুর সরবরাহ, দামও কম। বাজারে এখন প্রচুর আলু পাওয়া যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে দেশি আলু। এ জন্য দাম কমেছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ কেজি ৫০-৫৫ টাকা, ভারতীয় নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা দরে। এছাড়া দেশি রসুন ২৫০ ও ভারতীয় রসুন প্রতি কেজি ২২০ টাকা, চীনা আদা ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খোলা সয়াবিন তেল গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা পাম তেল ও সুপার প্রতি কেজি ১৭৫ টাকা, বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিন ৮৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে আগের মতোই চড়া চালের বাজার। প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৮০-৯০ টাকা, মানভেদে মিনিকেট ৮৫-৯০ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৬০-৬৫ টাকায়, মোটা চাল (গুটিস্বর্ণা) ৫৫-৫৮ টাকা, পুরোনো আটাশ ৬৫ টাকা, পাইজাম ৬০ টাকা, কাটারিভোগ ৮৫ টাকা, বাসমতী ৯৪-৯৮ টাকা, পোলাওয়ের চাল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ও আমন ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, বাজারভেদে চালের দাম ৫-৬ টাকা কমবেশি হয়। এর কারণ সরবরাহ ও মজুত। কারও কাছে পুরোনো চাল থাকলে সে আগের দামে বিক্রি করতে পারে। তবে চালের দামের ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। জুবায়ের নামে একজন ক্রেতা বলেন, ৭০ টাকার নিচে ভালো কোনো চাল নেই। ভরা মৌসুমে চালের এতদাম হলে অন্যসময় কী হবে?
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।