ফাইল ছবি
মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক সেবা (এমএফএস) দাতা প্রতিষ্ঠান ডাক বিভাগের নগদে অনুমোদন ছাড়াই ইলেক্ট্রনিক মানি তৈরি, সরকারি ভাতা বিতরণ না করে অর্থ সরানোসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। জানালেন, দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে।
রোববার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ‘ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল ইকোসিস্টেম: ব্রিজিং দ্য গ্যাপ’ শীর্ষক সেমিনারে নগদের অনিয়মের বিষয়গুলো তুলে ধরেন তিনি।
রাজধানীর পুলিশ প্লাজায় এ সেমিনারের আয়োজন করে মেট্টোপলিটান মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট।
গভর্নর বলেন, এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদে আমরা প্রশাসক বসিয়েছি, তারা কাজ করছে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো প্রাতিষ্ঠানটিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা। এজন্য নগদকে পুনর্গঠন করা হবে, এমএফএস প্রতিষ্ঠান বিকাশের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে গড়ে তুলতে।
তিনি বলেন, নগদে অডিট চলছে। ইতোমধ্যে আমরা খুজে পেয়েছি প্রকৃত টাকার চেয়ে অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক মানি তৈরি করা হয়েছে (ডিজিটাল মানি ক্রিয়েশেন ইন এক্সেস হব ফিজিক্যাল মানি)। নগদে অতিরিক্ত ৬০০ কোটি টাকা তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদ আকারে জমা নেয়া অথের্র সমপরিমাণ ইলেক্ট্রনিক অর্থ তৈরি করতে পারবে গ্রাহকের হিসাবে।
উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, কোনো গ্রাহক যদি তার হিসাবে ১০০ টাকার ক্যাশইন করে, সমপরিমাণ ১০০ টাকার ইলেক্ট্রনিক মানি তৈরি করতে পারবে কোনো এমএফএস প্রতিষ্ঠান।
নগদ এখানে টাকা জমা না নিয়েও ৬০০ কোটি টাকার ইলেক্ট্রনিক মানি তৈরি করেছে। মূলত এর মাধ্যমে ৬০০ কোটি টাকা নগদ আকারে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটিতে নিরীক্ষা চালানোর পরে দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে মন্তব্য করে গভর্নর বলেন, এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকার অনিয়ম ডিসকভার (খুজেঁ) করতে পেরেছি।
বয়স্ক, উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন প্রকার সরকারি ভাতার অর্থ বিতরণ করা হয় নগদের মাধ্যমে।
সে অর্থ বিতরণ না করে অন্যখানে সরানো হয়েছে মন্তব্য করে আহসান এইচ মনসুর বলেন, নগদ সামাজিক নিরাপত্তা খাতে দেয়া ভাতা বিতরণ না করে সরিয়ে নিয়েছে।
অনিয়ম বের করতে অনুসন্ধান চলছে নগদে। প্রতিষ্ঠানটিকে সক্রিয় করতে নতুন বিনিয়োগ আনা হবেও বলে জানিয়েছেন আহসান এইচ মনসুর।
ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থা টেকসই করতে নতুন বিনিয়োগ আনা প্রয়োজন। টেলিকম খাতে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করছে না অতিরিক্ত শুল্ক থাকায়।
গভর্নর বলেন, আমাদের টেলিকম খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। নইলে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পাওয়া যাবে না। কলড্রপ হবে। এটি নীতিমালা করে সম্ভব না। প্রয়োজন বিনিয়োগ।
ব্যক্তি খাতে ঋণ বিতরণ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমানত প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। মূলত এ কারণে ব্যাংকের ঋণ দেয়ার পরিমাণও কমছে।
এমসিসিআই সভাপতি টি কামরান আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তব্য দেন বিকাশের প্রধান নির্বাহী কামাল কাদির, পিআরআই গবেষক বজলুল হক খন্দকার।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।