Apan Desh | আপন দেশ

দুদকের তদন্তাধীন দুই মামলা

সোনালীর ১৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎকারী সোবহান রূপালীর চেয়ারম্যান! 

বিশেষ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৫৯, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ২০:০১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সোনালীর ১৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎকারী সোবহান রূপালীর চেয়ারম্যান! 

উপর থেকে : রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, মোস্তফা কামরুস সোবহান ও সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। ফাইল ছবি

গ্রাহকের আমানতের ১৮৭ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা হয় সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরিচালক মোস্তফা কামরুস সোবহানসহ তার পরিবারের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে। ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ মামলা দায়ের করে।

সংস্থার সহকারী পরিচালক রকিবুল হায়াত মামলাটি এখন তদন্ত করছেন। তদন্ত প্রক্রিয়ায় এরই মধ্যে ৬ আসামির বিরুদ্ধে দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন, সোনালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরিচালক মোস্তফা কামরুস সোবহান, পরিচালক ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া, তাসনিয়া কামরুন আনিকা, পরিচালক ফজলুতুন নেছা, মোস্তফা কামরুস সোবহানের স্ত্রী সাফিয়া সোবহান চৌধুরী, তানিয়ার স্বামী মীর রাশেদ বিন আমান, নিকটাত্মীয় নূর-ই-হাফজা। মামলায় মোট আসামি করা হয় ৮ জনকে। এর মধ্যে  মোস্তফা কামরুস সোবহানের পরিবারেরই ৬ জন। তার পিতা এবং সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসকেও এ মামলার আসামি করা হয়েছিলো।

আরও পড়ুন<<>> দুদক কর্মকর্তার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নিষ্ফল লকার অভিযান, নেপথ্যে ভয়ঙ্কর কাণ্ড!

গত ২৫ জানুয়ারি তিনি মারা যাওয়ায় তদন্তে তার অংশটি বাদ দিয়ে এগিয়ে চলছে তদন্ত কার্যক্রম। মামলাটিকে মোস্তফা কামরুস সোবহান সম্পূর্ণ ‘পারিবারিক বিষয়’ হিসেবে দাবি করে আসছে। তবে দুদকের এজাহারে পরস্পর যোগসাজশে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ, জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। দণ্ডবিধি ১৮৬০ এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ধারা ৪(২) ও (৩) ধারা প্রয়োগ করা হয়।

এফআইআর-এ বলা হয় আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বেআইনিভাবে আর্থিক সুবিধা লাভের অভিপ্রায়ে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর দায়িত্ব নেন। তারা প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি মিথ্যা চুক্তিপত্র তৈরি এবং অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করেন। এর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন মেয়াদে বিমা কোম্পানিটির তহবিল থেকে অবৈধভাবে ১৮৭ কোটি ৮৪ লাখ ১৫ হাজার ৯৬৬ টাকা উত্তোলন করেন। পরবর্তীতে তারা কোম্পানির অর্থ ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর এবং বিভিন্ন স্তরের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তিগত সম্পদে রূপান্তর করেন।

আরও পড়ুন<<>> ন্যাশনাল লাইফের সাড়ে চারশ’ কোটি টাকা মোরশেদের পেটে

এ মামলায় গতবছর ২২ অক্টোবর ৮ আসামির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া।  

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অর্থ আত্মসাৎ, পাচার মামলার আসামি এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত সেই মোস্তফা কামরুস সোবহানকে রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের ২১২তম সভায় তাকে চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত কথিত ‘পর্ষদ সভা’য় কোনো ধরনের রেজুলেশন নেয়া হয়নি। রেজুলেশন ছাড়াই পরিবারের সদস্যরা মিলে মোস্তফা কামরুস সোবহানকে রূপালী  ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়।

আরও পড়ুন<<>> ‘ইসলামী ব্যাংকের জলিলের ফয়সালা চলতি সপ্তায়’

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মোস্তফা কামরুস সোবহান সদ্যপ্রয়াত মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। রূপালী ইন্স্যুরেন্সের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, মোস্তফা কামরুস সোবহান একজনক বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তা, যিনি বিমা, শিক্ষা, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা ও দক্ষ নেতৃত্ব প্রদর্শন করেছেন। কিন্তু তিনি যে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার মামলার অন্যতম আসামি-এ তথ্য চেপে যাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মোস্তফা কামরুস সোবহানের পরিবারের মালিকানাধীন রূপালী ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধেও দুদকে আরেকটি মামলা চলমান।  

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়