
ছবি : আপন দেশ
অতিরিক্ত মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে রমজান মাসের শুরুতে লেবু-শসা-বেগুনে আগুন লেগেছিল। সপ্তাহ পেরুতেই সেটি অনেকটা কমে ক্রেতাদের মনে স্বস্তি ফিরিয়েছে। সে সঙ্গে কমেছে মাছ ও মুরগির দামও। সবজির বাজার গত কয়েক মাসের মতই স্বস্তিদায়ক রয়েছে। তবে অস্বস্তি বাড়িয়েছে চালের দাম। কেজিপ্রতি দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে অতি জরুরি এ পন্যের দাম।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। মুগদা কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে লেবু, শসা ও বেগুনের মতো বাড়তি চাহিদার পণ্যগুলোর দাম কমছে। আগে বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। লেবুর হালি ৩০ টাকা ও শসা ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজার আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। করলা আর ঢেঢ়স ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম কমই। প্রতি কেজি করলা ৬০ থেকে ৮০ এবং ঢেঢ়স ৬০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। বরবটি ৫০ টাকা, লতি ৬০ টাকা ও পটোল ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৩০ টাকা, গাজর ২৫-৩০ টাকা, টমেটো ৩০-৪০ টাকা, শিম ২৫ টাকা ও ধনেপাতা ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি পিস ফুলকপি ২০-২৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, ব্রকলি ৪০-৫০ টাকা, চালকুমড়া ৫০ টাকা ও লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০-৬০ টাকায়।
গত বছর উত্তাপ ছড়ানো পেঁয়াজেরও ব্যাপক দরপতন ঘটেছে। খুচরা পর্যায়ে দেশি ভালোমানের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪৫ টাকা। যেখানে গত বছর এ সময় বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাকে খরচ করতে হয়েছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। একইভাবে আলুর দাম অর্ধেক কমে এখন ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
এ বছর পবিত্র রমজানে বেশ স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে রয়েছে মুদিপণ্যের দাম। রোজা শুরুর আগেই বাজারে যে অরাজকতা এবার দেখা যায়নি। এ বছর এখন পর্যন্ত চিনি, খেজুর, ডালের দাম কম রয়েছে।
রোজা শুরুর আগে হঠাৎ চড়ে যাওয়া মাছ ও মাংসের বাজারেও অনেকটাই ফিরেছে স্বস্তি। বাজারে ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে মুরগির দাম। কেজিতে ২০ টাকা কমে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকায়। আর ৩০ টাকা কেজিতে কমে সোনালি মুরগি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৮০ টাকায়। দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৭০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকায়।
আরও পড়ুন<<>>রমজান মাসে দান-সদকার গুরুত্ব অপরিসীম
বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০-১২৫ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ১৮০-২০০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতি কেজি রুই ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতল ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের শিং ৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, আইড় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, টেংরা ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা ও শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮৫০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ২৫০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।
তবে ক্রেতাদের অস্বস্তিতে ফেলেছে চালের দাম। রাজধানীর বাজারে ভালোমানের সরু চাল কিনতে প্রতি কেজিতে দাম দিতে হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। মাঝারি চালের দাম ৭০ থেকে ৭৬ টাকা আর মোটা চাল কিনতে ৫৮ থেকে ৬২ টাকা দিতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষকে।
চাল বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত ছয় মাসে তিনদফা চালের দাম বেড়েছে। সবকিছু হিসাবে নিলে কেজিপ্রতি প্রায় ৮ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে। এরমধ্যে শুধু একদফা দুই-এক টাকা কমেছিল।
আমির হোসেন নামের এক চাল বিক্রেতা বলেন, শেষ গত এক সপ্তাহে আবারও চালের দাম কেজিপ্রতি দুই টাকা বেড়েছে। রশিদ, উৎসব ডায়মন্ড, মোজাম্মেল ইত্যাদি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের সরু মিনিকেট চালের ২৫ কেজির বস্তায় ৫০ টাকা বেড়েছে। এ চাল ৮৬ থেকে ৮৮ টাকা কেজি পড়ছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।