
ছবি : আপন দেশ
পুরো রমজান মাস জুড়ে সব ধরনের সবজির দাম তুলনামূলক কম থাকলেও ঈদের পর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী সবজির বাজার। এবার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে পেঁয়াজের বাড়তি ঝাঁজ। সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা বাড়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে ক্রেতারা। এবার ভরা মৌসুমে চালের দাম কমেনি বরং দিনে দিনে বেড়েছে। এখন সেটি অব্যাহত আছে। তবে তুলনামুলকভাবে মাছ, মুরগি ও মাংসের বাজারে অনেকটাই স্বস্তি আছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
বিক্রেতারা জানান, ঈদের পর প্রায় প্রতিদিন পাইকারি বাজারে একটু একটু করে বাড়ছে সবজির দাম। শীতকালীন সবজি শেষ হওয়া এবং নতুন সবজি না উঠায় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। তবে হঠাৎ করেই ঊর্ধ্বমুখী পেঁয়াজের বাজার। গত দুই সপ্তাহে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ২০ টাকা বেড়েছে। এখন পাইকারিতে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায়।
জাহাঙ্গীর নামের এক ক্রেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা ও তেলের দাম ১৪ টাকা বেড়েছে। তাহলে একটি পরিবারের প্রায় ২০০ টাকা খরচ বাড়ছে এই দুটি পণ্যের পেছনেই। তাহলে আমাদের মধ্য-মধ্যবিত্ত মানুষ কীভাবে খরচ সমন্বয় করবে?
নতুন করে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। কমলাপুর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঝিঙা প্রতি কেজি মানভেদে ৮০ থেকে ৯০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৭০ থেকে ৮০ টাকা। বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, শজনে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, গাজর ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, পেঁপে ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও দেশি শসা ৮০ টাকা। প্রতি পিস চালকুমড়া ৬০ টাকা। কাঁচা পেঁপে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ বাজারে আসা ক্রেতা আল মামুন বলেন, বাজারে সবজির দাম বাড়তি। বিশেষ করে ঈদের পর থেকে প্রতিদিনই সবজির দাম বেড়েই চলছে। এখানে ৭০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। আর অন্যান্য সবজির দাম তো সেঞ্চুরি পেরিয়েছে। এত দামি সবজি আমাদের মতো সাধারণ করে তাদের কিনে খাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া এ সপ্তাহে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রতি লিটারে ১৪ টাকা। নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১৮৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা। পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, যা ছিল ৮৫২ টাকা। বোতলজাত তেলের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম হবে প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা, যা ছিল ১৫৭ টাকা।
আর বেশ আগে থেকে চড়া রয়েছে চালের দাম। মোটাদাগে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য এখন বাজারে বেশকিছু পণ্যের দাম অস্বস্তিদায়ক। হুট করে কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়ায় তাদের সংসার খরচ বেড়েছে।
তবে মুরগি মাংসের বাজারে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে। ডিমের দামও আগের মতো কম। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে বাড়তে থাকে মাংসের দাম। তখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২১০ থেকে ২৩০ টাকা দরে। একইভাবে সোনালি জাতের মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা দরে। এদিন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
একইভাবে কিছুটা দর কমেছে গরুর মাংসের। ঈদের আগে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়। এখন দর কমে কেজি ৭৫০ টাকায় মিলছে।
বেশ কয়েক সপ্তাহ নিম্নমুখী ডিমের দরে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দামে। মাসখানেক ধরেই এই দামের আশপাশে রয়েছে ডিমের দর।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।