ফাইল ছবি
গহনা ক্রয়-বিক্রয় ও বিপণনে নতুন নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের কেন্দ্রীয় সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ‘নির্দেশিকা-২০২৩’ প্রকাশের এ তথ্য জানায়।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বর্তমানে বাজুস ৪০ হাজার পরিবারের দেশের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য সংগঠনে উন্নীত হয়েছে। বাজুসের মুখ্য উদ্দেশ্য গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করা, স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা এবং দেশীয় স্বর্ণ শিল্পের পৃষ্ঠপোষকতা করা। আমরা বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বণের্র মান ও দাম নির্ধারণ করে আসছি। জুয়েলারি শিল্পের ঐতিহ্য, ব্যবসায়িক সুনাম ও ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সার্বিক দিক বিবেচনা করে অলংকার ক্রয়-বিক্রয় ও বিপণন নির্দেশিকা-২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে, যা নিম্নরূপ:
স্বর্ণালংকার:
১. স্বর্ণ নীতিমালা (২০১৮) ও সংশোধিত স্বর্ণ নীতিমালা (২০২১) মোতাবেক স্বর্ণের মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে হলমার্ক পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাই এই বিধান মেনে হলমার্ক নিশ্চিত করে গহনা বিক্রয়, বিপণন, প্রস্তুত ও সরবরাহ করতে হবে।
২. এক শ্রেণির অসাধু কারিগর/ব্যবসায়ী বিভিন্ন প্রলোভন ও অজুহাতে নিম্নমানের গহনা সাধারণ জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে সরবরাহ করে আসছে। জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা আবার সরল বিশ্বাসে ক্রেতাগণের নিকট তা বিক্রি করছে। ফলে একদিকে যেমন ভোক্তা সাধারণ প্রতারিত হচ্ছে আর অন্যদিকে ব্যবসার সুনামও নষ্ট হচ্ছে। তাই এই ধরনের নিম্নমানের গহনা প্রস্তুত, বিপণন ও বিক্রয় করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদি কোন কারিগর/ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এই ধরনের কাজে লিপ্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে বিধি মোতাবেক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৩. ক্যাডমিয়াম পাইনের নামে নিম্নমানের কোন গহনা প্রস্তুত, বিপণন ও বিক্রয় করা যাবে না। এধরণের গহনা প্রস্তুত, বিপণন ও বিক্রয়ের সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৪. এক শ্রেশির অসাধু ব্যবসায়ী ক্রেতা সাধারণের নিকট থেকে ক্যাডমিয়াম গহনার মূল্য নিয়ে তাদের নিম্নমানের গহনা প্রদান করছেন, যেটা প্রতারণার শামিল এবং দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই জুয়েলারি ব্যবসার সুনাম ও ঐতিহ্য রক্ষার্থে এ ধরনের প্রতারণামূলক কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. পাইন ঝালার কোনো অলংকার প্রস্তুত, বিপণন ও বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সনাতন পদ্ধতির অলংকার শুধুমাত্র ক্রেতা সাধারণের নিকট থেকে ক্রয় করা যাবে।
৬. সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশে সোনার ৪টি মান রয়েছে, যথাক্রমে ১৮, ২১, ২২ ও ২৪ (৯৯ দশমিক ৫) ক্যারেট। এই মানের বাহিরে কোনো সোনা বা সোনার অলংকার বিক্রি করা যাবে না। এখানে উল্লেখ্য তেজাবি স্বর্ণের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধতা কোনো অবস্থাতেই ৯৯ দশমিক ৫ এর নিচে গ্রহণযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে সকল হলমাকিং কোম্পানিকে উক্ত নীতিমালা অনুযায়ী সোনা পরীক্ষা করতে হবে। উল্লেখ্য, সোনা বা সোনার অলংকারের গায়ে হাতে লেখা ক্যারেট সিল গ্রহণযোগ্য নয়।
৭. সোনার অলংকার এক্সচেঞ্জ বা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ও পারচেজ বা ক্রেতার নিকট থেকে ক্রয়ের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ বাদ দিতে হবে। এছাড়া সোনার অলংকার বিক্রয়ের সময় ক্রেতা সাধারণের নিকট থেকে গ্রাম প্রতি কমপক্ষে বা নুন্যতম ৩০০/- টাকা মজুরি গ্রহণ করতে হবে। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে তাহলে কমপক্ষে বা নূন্যতম ২৫ হাজার টাকা জরিমান প্রদান করতে হবে। এরপরও যদি দ্বিতীয়বার এই আইন অমান্য করে তাহলে তার সদস্যপদ কেন বাতিল করা হবে না, এই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হবে। নোটিশের জবাব যদি সন্তোষজনক না হয় তাহলে বাজুসের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৮. নিয়মানুযায়ী ক্রেতা সাধারণের নিকট থেকে সরকার নির্ধারিত হারে ভ্যাট সংগ্রহ করে সরকারি কোষাগারে নিজ দায়িত্বে জমা করতে হবে। যদি কেউ এই নিয়ম অমান্য করে ভ্যাট ফাঁকি দেয় এবং ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে অভিযুক্ত হয় তাহলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা না করে বরং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
৯. অর্ডারকৃত অলংকার প্রস্তুতের ক্ষেত্রে অথবা বুকিংকৃত অলংকার সরবরাহের ক্ষেত্রে যেদিন অর্ডার বা বুকিং দেয়া হবে সেদিনের বাজার মূল্য কার্যকর হবে। অর্ডার সরবরাহ/গ্রহণের সময়সীমা সর্বোচ্চ এক মাস হবে। এক মাস পার হলে অর্ডারটি বাতিল বলে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে বায়না/অগ্রিম হিসেবে প্রদত্ত টাকা/সোনা থেকে ১০% বাদ দিয়ে ক্রেতা সাধারণকে বাকী টাকা/সোনা ফেরত দিতে হবে।
১০. ক্রেতাসাধারণকে আকৃষ্ট করার জন্য সোনার অলংকার বিক্রয়ের সময় কোন প্রকার প্রলোভনমূলক উপহার প্রদান বা মূল্যছাড়/মজুরি ছাড়/ভ্যাট ছাড় দেয়া যাবে না।
১১. বাজুস কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম বা বেশি মূল্যে সোনা বা রুপার গহনা বিক্রয় করা যাবে না। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান এর ব্যত্যয় ঘটায় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানা সহ প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পুরাতন সোনা ক্রয়ের ক্ষেত্রে নির্দেশনা:
ক) পুরাতন সোনা ক্রয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিক্রেতাকে ক্রয় রশিদ প্রদান করতে হবে।
খ) সংশ্লিষ্ট জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের ক্রয় রশিদে বিক্রেতার যাবতীয় তথ্যাদি যেমন- নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর উল্লেখ থাকতে হবে।
গ) বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের মূলকপি থেকে নিজ দায়িত্বে উভয় পাশের ফটোকপি রাখতে হবে।
গ) মূল মালিক ব্যতিত কোনো প্রতিনিধির কাছ থেকে অলংকার ক্রয় করা যাবে না।
ব্যাগেজ রুলের আওতায় আনা সোনা এবং অলংকার ক্রয় সংক্রান্ত নির্দেশনা:
ক) বিক্রেতার পাসপোর্টের মূলকপি থেকে নিজ দায়িত্বে ফটোকপি করে রাখতে হবে।
খ) বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের মূলকপি থেকে নিজ দায়িত্বে উভয় পাশের ফটোকপি রাখতে হবে।
গ) প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে সোনা কিনতে হবে।
ঘ) এয়ারপোর্টে ডিক্লেয়ারেশন/ট্যাক্সের আওতায় থাকলে ট্যাক্স প্রদানের ডাকুমেন্ট (মূল কপি) সংরক্ষণ করতে হবে।
ডায়মন্ডের অলংকার ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত নির্দেশিকা:
ক) ১ থেকে ৫০ সেন্টের মধ্যে সকল ডায়মন্ডের গহনার ক্ষেত্রে কালার ও ক্ল্যারিটি সর্বনিম্ন মানদণ্ড হবে (ওঔ/আইজে) ও (ঝও-২/এসআই-টু)।
খ) ৫০ সেন্টের উপরে সকল ডায়মন্ডের গহনার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে।
গ) ডায়মন্ডের গহনায় স্বর্ণের সর্বনিম্ন মানদণ্ড ১৮ ক্যারেট। অর্থ্যাৎ ডায়মন্ডের গহনায় ১৮ ক্যারেটের নিচের মানের স্বর্ণ ব্যবহার করা যাবে না।
ঘ) ডায়মন্ডের অলংকার বিক্রয়ের সময় বাধ্যতামূলক ক্যাশমেমোতে গুণগত মান নিদের্শক উল্লেখ করতে হবে।
ঙ) ডায়মন্ডের অলংকার এক্সচেঞ্জ বা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ও পারচেজ বা ক্রেতার নিকট থেকে ক্রয়ের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ বাদ দিতে হবে।
চ) ক্রেতা সাধারণকে আকৃষ্ট করার জন্য ডায়মন্ড অলংকার বিক্রয়ের সময় কোন প্রকার প্রলোভনমূলক উপহার সামগ্রী বা একটা কিনলে একটা ফ্রি এই ধরনের অফার প্রদান করা যাবে না। এই নির্দেশের ব্যত্যয় ঘটলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ বাতিল এবং কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ছ) কোন জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে আসল ডায়মন্ডের নামে নকল ডায়মন্ড (মেসোনাইট, সিভিডি, ল্যাব মেইড, ল্যাব বর্ন ইত্যাদি) বিক্রি করলে ওই প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ বাতিল এবং কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জ) ডায়মন্ডের গহনার মান নিশ্চিতকরণে মানসম্পন্ন ডায়মন্ড ল্যাবের সনদ থাকতে হবে।
ঝ) ডায়মন্ড অলংকার বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫% ডিসকাউন্ট প্রদান করা যাবে। যদি কোন জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান এ নিয়ম অমান্য করে তাহলে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানাসহ বিধি মোতাবেক সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রুপার গহনা ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত:
১. ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে সোনার গহনার মতো রুপার গহনার বাধ্যতামূলক হলমার্ক থাকতে হবে।
২. বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্যাশমেমোতে অবশ্যই ক্যারেট ও ওজন উল্লেখ থাকতে হবে। তবে মেশিন মেইড আমদানিকৃত রুপার গহনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী গহনার মান নিশ্চিত করতে বাধ্য থাকবে।
৩. রুপার অলংকার এক্সচেঞ্জ বা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ ও পারচেজ বা ক্রেতার নিকট থেকে ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ বাদ দিতে হবে।
৫. ভোক্তা অধিকার ও প্রতারণা রোধে রুপার গহনার ডিসপ্লেতে কোনক্রমেই ইমিটেশন/মেটাল/গোল্ড প্লেটকৃত জুয়েলারি রাখা যাবে না। ইমিটেশন/মেটাল/গোল্ড প্লেটকৃত জুয়েলারি আলাদা ডিসপ্লেতে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ডিসপ্লেতে বড় ও স্পষ্ট অক্ষরে জুয়েলারির ধরন উল্লেখ করতে হবে।
৬. কোনো জুয়েলারি ব্যবসায়ী বা বাজুস সদস্য ক্রেতাদের কাছে ইমিটেশন/মেটাল/গোল্ড প্লেটকৃত অলংকার রুপার অলংকার বলে বিক্রি করে, তবে তার সদস্যপদ বাতিলসহ দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৭. বাজুস কর্তৃক সারাদেশে রুপার ৪টি মান নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ১৮, ২১, ২২ (ক্যারেট ক্যাডমিয়াম) ও সনাতন (সনাতনে ১০ আনা জমা থাকতে হবে)। এই মানের বাইরে কোনো রুপার অলংকার বিক্রয় করা যাবে না।
৮. রুপার অলংকার বিক্রির সময় ক্রেতাদের কাছ থেকে গ্রাম প্রতি ২৬ টাকা মজুরি নেয়া যাবে।
সরকারি আইন ও নির্দেশনা:
১. সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে জুয়েলারি ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে এবং বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে।
২. গোল্ড (প্রকিউরমেন্ট , স্টোরেজ অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন) ১৯৮৭ এর আওতায় জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে ডিলিং লাইসেন্স নিয়ে বৈধভাবে জুয়েলারি ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে এবং বছরের নির্দিষ্ট সময়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ডিলিং লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে।
৩. সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক ভ্যাট নিবন্ধন থাকতে হবে। তাই ভ্যাট নিবন্ধন করে নিবন্ধন সনদ (ইওঘ) প্রতিষ্ঠান বা শো’রুমের ভিতরে প্রদর্শন করতে হবে।
৪. সরকারি নিয়মানুযায়ী প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে নামে টিআইএন সনদ থাকতে হবে এবং শো’রুমের দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শনও করতে হবে।
৫. ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত ও আইনি ঝামেলা এড়াতে নিজ দায়িত্বে বিএসটিআই থেকে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ওজন পরিমাপক যন্ত্র পরীক্ষা করে স্ট্রিকার ও সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে।
৬. বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন ঝুকি প্রতিরোধে রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে মূল্যবান ধাতু এবং মূল্যবান পাথরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে আখ্যায়িত করেছে। এজন্য কোনো গ্রাহক মূল্যবান ধাতু ও পাথর ক্রয়-বিক্রয়ের সময় ১০ লাখ টাকা বা তদুর্ধ্ব পরিমাণ নগদ টাকার লেনদেন করে তাহলে বিএফআইইউ বরাবর গ্রাহকের লেনদেন সম্পর্কিত রিপোর্ট দিতে হবে। এক্ষেত্রে গ্রাহকের পূর্ণাঙ্গ তথ্যাদি কমপক্ষে পাঁচ বছর সংরক্ষণ করতে হবে।
৭. বাজুসের নিয়মানুযায়ী সদস্যভুক্ত সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক বাজুসের স্টিকার ও হালনাগাদ সনদপত্র শোরুমের ভেতরে দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।
৮. বাজুসের সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানে স্টিকার, সনদপত্র ও আইডি কার্ড প্রদান করা হচ্ছে। এ বাবদ ঢাকা মহানগরের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের জন্য এক হাজার ৫০০ টাকা। উল্লেখ্য জেলা ও উপজেলা শাখায় রসিদের মাধ্যমে ৫০০ টাকা জমা রাখবেন এবং বাকি এক হাজার টাকা বাজুস কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করবেন।
৯. বাজুসের ভর্তি ফি ঢাকা মহানগরের আওতাধীন জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা ও ঢাকা মহানগর ছাড়া সারা দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দুই হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
১০. কোনো জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে মিল রেখে সাদৃশ্যপূর্ণ নাম বা নামের পূর্বে-পরে নিউ, দি বা অন্য কিছু বা বিদেশি ব্র্যান্ডের বিভিন্ন জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের নাম সংযুক্ত করে নতুন কোনো জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা যাবে না। কোন জুয়েলারি ব্যবসায়ী যদি এ নিয়ম না মেনে প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করে ওই প্রতিষ্ঠানকে বাজুসের সদস্যভুক্ত করা হবে না।
১১. নতুন প্রতিষ্ঠানের নামকরণের আগে বাজুসের কাছ থেকে নামের ছাড়পত্র নিতে হবে।
১২. কোনো জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান যদি অন্য কোনো জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে নিয়োগ দিতে চান, তাহলে ওই কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পূর্ববর্তী দোকানের ছাড়পত্র (অনাপত্তি পত্র) প্রাপ্তি সাপেক্ষে নিয়োগ দেবেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১৩. সোনার গহনা পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের চালানের কপি বাধ্যতামূলকভাবে বহনকারীর সঙ্গে রাখতে হবে। উল্লেখ্য চালানে বহনকারীর নাম, মোবাইল নম্বর, সোনার ওজন, সংখ্যা ও গন্তব্য অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে এবং বহনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে থাকতে হবে।
ব্যবসায়িক সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে বাজুস প্রণীত উল্লেখিত বিধি-বিধান ও সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করে যথাযথভাবে ব্যবসাকার্য পরিচালনা করার অনুরোধ করা হলো।
গহনা ক্রয়-বিক্রয় ও বিপণন নির্দেশিকা-২০২৩ অমান্যকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সমূহকে অবহিত করা হবে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।