Apan Desh | আপন দেশ

এস আলম গ্রুপের এবার ৫ ব্যাংকের জরিমানা ২৮১ কোটি টাকা

আফজাল বারী

প্রকাশিত: ০২:৪৫, ১২ আগস্ট ২০২৩

আপডেট: ২০:৩২, ২৫ অক্টোবর ২০২৩

এস আলম গ্রুপের এবার ৫ ব্যাংকের জরিমানা ২৮১ কোটি টাকা

ফাইল ছবি

ঢাকা: বাংলাদেশের রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম। এদেশের শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি মানুষ ইসলাম ধর্ম অনুসারী। পণ্য, প্রতিষ্ঠানের বা সংগঠনের নাামের আগে-পরে ‘ইসলাম’ শব্দ জুড়ে দিয়ে তা নিয়ে প্রতারণার ঘটনাও ঘটছে অহরহ।

ধর্ম নিয়েও চলছে রাজনীতি। দাবি উঠেছে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের। আর্থিকখাতও এই ‘ইসলাম’ শব্দ ব্যবহার ও অপব্যবহারে বসে নেই। দেশের ব্যাংকখাতে বেশ কিছু ব্যাংকের নামের আগে-পরে ইসলাম শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। তাতে লাভ-ক্ষতির হিসাবটা দৃশ্যমান নয়। দাবি করা হয় নামের আগে-পরে ‘ইসলাম’ শব্দ ব্যবহারকারী সব ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালিত হয় শরিয়াহভিত্তিক।

এদিকে দেশের বহুলআলোচিত এস আলম গ্রুপের (সাইফুল আলম মাসুদ) মালিকানাধীন ৫টি ব্যাংক ২৮১ দশমিক ৩ কোটি টাকা জরিমানা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। এর মধ্যে ৪ ব্যাংকের নামের সাথে রয়েছে ‘ইসলামী’ শব্দটি। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে ২৮১ দশমিক ৩ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। নগদ ও তারল্যের ন্যূনতম সীমা ধরে রাখতে না পারায় ব্যাংকগুলোকে এই জরিমানা করা হয়েছে।

     আরও পড়ুন<<>> এস আলম গ্রুপের অর্থ পাচার তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংককে সর্বোচ্চ ১৬২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরপর আছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক (৬১ দশমিক ৩ কোটি টাকা), সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (৩০ কোটি টাকা), ইউনিয়ন ব্যাংক (২০ কোটি টাকা) ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক (৮ কোটি টাকা)।

জরিমানার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র সারোয়ার হোসেন বলেন, যেসব ব্যাংক সিআরআর ও এসএলআর ঘাটতিতে ভুগছে, তাদের নিয়ম অনুযায়ী জরিমানা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আমানত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখতে হয়। একে বলা হয় ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও (সিআরআর)। এছাড়া গ্রাহকদের আমানতের ন্যূনতম শতাংশ নগদ, স্বর্ণ বা অন্যান্য সিকিউরিটিজ আকারে রাখতে হয়। একে সংবিধিবদ্ধ তারল্য অনুপাত (এসএলআর) বলা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম অনুসারে, ইসলামী ব্যাংকগুলোর জন্য ন্যূনতম সিআরআর প্রয়োজন নগদের ৪ শতাংশ এবং এসএলআর প্রয়োজন আমানতের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। সিআরআর ও এসএলআর বজায় রাখতে ব্যর্থ হলে প্রতিদিনের ঘাটতির পরিমাণের ওপর যথাক্রমে ৯ শতাংশ ও ৮ দশমিক ৫ শতাংশ জরিমানা করা হয়।

জানা যায়, গত ৩০ জুন ইসলামী ব্যাংকের সিআরআর ঘাটতি ছিল ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, কিন্তু তাদের এসএলআর সীমা ঠিক ছিল।

আরও পড়ুন <<>> ইসলামী ব্যাংকের নয়া চেয়ারম্যান এস আলমের ছেলে আহসানুল আলম

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের (এফএসআইবিএল) সিআরআর ঘাটতি ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা এবং এসএলআর ঘাটতি ৯০০ কোটি টাকা। এই ব্যাংকটির চেয়ারম্যান এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) সিআরআর ঘাটতি ছিল ৭০০ কোটি টাকা এবং এসএলআর ঘাটতি ছিল ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংকের সিআরআর ঘাটতি ছিল ৬০০ কোটি টাকা এবং এসএলআর ঘাটতি ছিল ৪৬০ কোটি টাকা এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের (জিআইবি) সিআরআর ঘাটতি ছিল ৩৬০ কোটি টাকা এবং এসএলআর ঘাটতি ছিল ৪৬০ কোটি টাকা।

পরে সিআরআর ও এসএলআর ঘাটতির কারণে ৫টি ব্যাংককে ৫.৯ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংককে ২ দশমিক ৯ কোটি টাকা, এফএসআইবিএলকে ১ দশমিক ৩ কোটি টাকা, এসআইবিএলকে ৭৯ লাখ টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংককে ৫৪ লাখ টাকা এবং জিআইবিকে ৩৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা থেকে জানা যায়, ব্যাংকগুলো বছরের প্রথমার্ধে তাদের জরিমানা পরিশোধ করতে পারেনি এবং সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে।

  আরও পড়ুন<<>> জামাই শ্বশুরের এসআইবিএল!

এর আগে, গত জুনে বছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পাঁচটি ব্যাংকের নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যাংকগুলোর আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে। তিনি বলেছিলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা ব্যাংকগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করেছি। আমরা তাদের সিআরআর ও এসএলআর ঘাটতির জন্য জরিমানা আরোপ করেছি, তবে এটি আমাদের অগ্রাধিকার নয়। আমরা চাই সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থার উন্নতি হোক।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়