প্রতীকী ছবি
দেশে এমপিওভুক্ত প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষক পদ শূন্য। এ অবস্থায় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে জটিলতা দেখা দিয়েছে। কিছু খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে সংকট মেটানোর চেষ্টা চলছে। তবে তা খুব একটা কাজে আসছে না। তাই নিয়মিতভাবে পদ পূরণে প্রতিবছর গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ খুবই প্রয়োজনীয়। কিন্তু তা করতে পারছে না বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কিছু বিষয়ে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি শিক্ষক পাওয়া যায়। আবারও কিছু বিষয়ে প্রয়োজনীয় শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পদ শূন্য রেখেই নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করতে হচ্ছে এনটিআরসিএ’কে। বিশেষ করে তথ্য-প্রযুক্তি (আইসিটি), ভৌত বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, চারু ও কারুকলা বিষয়ে শিক্ষক পাওয়া দুস্কর।
এনটিআরসিএ সূত্রে জানা যায়, ৬৮ হাজার ৩৯০ পদে নিয়োগের জন্য ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল, কলেজে ৩১ হাজার ৫০৮; মাদরাসা, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ৩৬ হাজার ৮৮২ শিক্ষকের পদ শূন্য ছিল। সব কয়টি পদই এমপিওভুক্ত।
গত বছরের ১২ মার্চ, প্রায় ৩৬ হাজার পদ শূন্য রেখে ৩২ হাজার ৪৩৮ প্রার্থীকে নির্বাচন করা হয়। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের মধ্যে তিন হাজার ৬০৭ জন পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য ভিআর ফরম দাখিল করেননি। তাছাড়া অবশিষ্ট এক হাজার ৭৯৯ জনের জাল সনদ পাওয়ায়, কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায়, বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম করায়, নিবন্ধন সনদ না থাকা সত্ত্বেও ভুল পদে আবেদন করায়, মামলার স্থগিতাদেশ থাকাসহ বিভিন্ন কারণে নিয়োগের সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন>> ইবির ভর্তি পরীক্ষা নিজস্ব পদ্ধতিতে
গত ২০ সেপ্টেম্বর তাদের মধ্যে ২৭ হাজার ৭৪ জন প্রার্থীকে চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে কলেজ ও স্কুলে ১৩ হাজার ৭০৫, মাদরাসায় ১১ হাজার ২৭৯, কারিগরিতে ৫১৬, সংযুক্ত স্কুলে এক হাজার ৫৮৩, সংযুক্ত মাদরাসায় ৬২১ জন। সেই সুপারিশ প্রকাশের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেনি এনটিআরসিএ।
যদিও চূড়ান্ত সুপারিশকৃতদের মধ্য থেকেও অনেকেই যোগদান করেননি। সেই সংখ্যাও তিন-চার হাজারের কম হবে না। ফলে আগেই শূন্য থাকা প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষকের মধ্যে গত দেড় বছরে শূন্য হওয়া আরও প্রায় ২০ হাজার পদ যুক্ত হয়েছে। এতে শূন্যপদের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৬০ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে, ৫৪ হাজার ৩০৪ শূন্যপদ পূরণে ২০২১ সালের ৩০ মার্চ তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল এনটিআরসিএ। ফল প্রকাশিত হয় ২০২২ সালের ১৫ জুলাই। সেখান থেকে ৩৪ হাজার ৭৩ জন শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। অর্থাৎ তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতেও ২০ হাজার পদ শূন্য রেখে সুপারিশ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন>> প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশ
এনটিআরসিএ সূত্র আরও জানায়, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে চারু ও কারুকলা বিষয়ে পদ খালি ছিল তিন হাজার। কিন্তু আবেদন পাওয়া গেছে ১১ জনের। আবার সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে এক হাজার ৬৩৩ পদ খালি, সেখানে আবেদন এসেছে ১৯ হাজার। অন্যদিকে একটি বিষয়ে পদ আছে চার হাজার, আবেদন করেছেন ৪২ হাজার প্রার্থী। আবার অনেক বিষয়ে আবেদনই পড়েনি। এছাড়া নারীদের জন্যও কোটা রয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে হাজার হাজার পদ খালি রেখেই সুপারিশ করতে হচ্ছে।
এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান মো. সাইফুল্লাহিল আজম বলেন, ‘আমি সদ্য যোগদান করেছি। তার পরও খুব দ্রুত যাতে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যায় সে ব্যাপারে আমরা কাজ করছি।’
এখনো ১৭তম নিবন্ধনের সনদ বিতরণ শেষ হয়নি। জানিয়েছেন এনটিআরসিএর সচিব মো. ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ন্যাশনাল মেরিট লিস্ট করতে হবে। এরই মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ই-রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। এরপর শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ ও তা যাচাই-বাছাই করতে হবে। এছাড়া আবেদনের বিষয়ে টেলিটকের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করতে হবে। তারপর পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।’
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।