ছবি: সংগৃহীত
দেশে ইসলামী উচ্চ শিক্ষার বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। ২০২৩ সালে মারামারি, ভাঙচুর, র্যাগিং ইত্যাদি কারণে আলোচনায় ছিল। এসব কারণে গত দেড় বছরে ১১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে ছয়জনকে স্থায়ী, আর পাঁচজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ফুলপরী খাতুনকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। এমনকি বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগ নেত্রীসহ পাঁচ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এর দায়ে ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচজনের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- ছাত্রলীগ নেত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও একই বিভাগের মুয়াবিয়া জাহান।
আরও পড়ুন>> শাবিপ্রবিতে ইফতার পার্টি আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা
গত বছরের জুলাই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে যান আইন বিভাগের ছাত্র রেজোয়ান সিদ্দিক কাব্য। চিকিৎসা কেন্দ্রের অফিসের চেয়ার টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।
গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক নবীন শিক্ষার্থী লিখিতভাবে র্যাগিংয়ের অভিযোগ করে। এতে ওই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের পাঁচ ছাত্রের বিরুদ্ধে ঘটনার সত্যতা পেয়ে। পাঁচজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
নিরাপদ ক্যাম্পাস চান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আসে নিজেকে বিকশিত করতে। অপরাধী হতে নয়। নবাগতরা বড়দের থেকে শিখবে, কিন্তু উল্টো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। মারামারি, ভাঙচুরে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েও সন্দিহান থাকতে হয়। চিন্তায় থাকে পরিবার। তবে সেই পরিস্থিতির অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে বলে অনেকের দাবি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহাদাত আজাদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেজন্য সোচ্চার থাকি। আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করলে সে ব্যাপারে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই। আর র্যাগিং বিষয়টা অত্যন্ত নিকৃষ্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে এ ধরনের চিন্তা রাখা অত্যন্ত বাজে মনোভাবের প্রকাশ। প্রত্যেক শিক্ষার্থীই এখানে এসেছে নিজেকে বিকশিত করতে। এখানে এসে মারামারি, র্যাগিং ইত্যাদি কাজ আসলেই আমাদের জন্য কষ্টদায়ক।’
ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য আমরা যথেষ্ট শিক্ষার্থীবান্ধব। গতবছর র্যাগিং কিংবা মারামারির জন্য যেসব সিদ্ধান্ত এসেছে সারাদেশের জন্য এটা দৃষ্টান্ত। আগামীতে যেন এমন কিছু না হয় তাই আইন আরও কঠোরভাবে জোরদার করা হয়েছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে আমরা পিছপা হবো না।’
আপন দেশ/এমএমসি/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।