Apan Desh | আপন দেশ

হল ত্যাগে বাধ্য করতে হামলা

পামেক ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছেঁড়ার অভিযোগ

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ১১ মে ২০২৪

পামেক ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছেঁড়ার অভিযোগ

ছবি: আপন দেশ

পাবনা মেডিকেল কলেজে (পামেক) হল ত্যাগে বাধ্য করতে শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করেছে শাখা ছাত্রলীগ। এ সময় রুমে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এমন অভিযোগ উঠেছে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। গত ৯ মে মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধু হলের গ্রাউন্ড ফ্লোরে এ হামলা হয়।

হল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের একটি সূত্র জানায়, চলতি সেশনের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট কাটাতে গত ৮ মে একটি নোটিশ দেয় হল কর্তৃপক্ষ। এতে পাবনার স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সাময়িকভাবে হল ছেড়ে নিজ বাসা থেকে যাতায়াত করতে বলা হয়। একইসঙ্গে হল সুপারদের জন্য বরাদ্দ রুম ছাড়তে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেয়া হয়। তাদেরকে অন্যান্য রুমে থাকতে হবে।

হল সুপারদের জন্য নির্ধারিত তিন রুমের একটিতে থাকেন রাহুল কুমার দাশ। তিনি ৫ম বর্ষের ছাত্র ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। অন্য দুই রুমে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুজন অনুসারী থাকেন। রাহুল কুমার দাশের অভিযোগ, গত ৯ মে রাত দেড়টায় ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক অভিতোষ চক্রবর্তী ও সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিন্নবী তাহার নেতৃত্বে ৩০/৪০ জন রুমে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় তাকে রুম থেকে বের দিতে চায়। 

এরপর রুমে হামলা চালিয়ে বেড ছুঁড়ে ফেলে, টেবিল ও অন্যান্য সরঞ্জাম ভাঙচুর করে। বই খাতার পাশাপাশি রুমে টাঙানো বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় ভাঙচুরের শব্দে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এসে বাধা দেয়। রাহুলসহ তাদেরকে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাহুল দাশ বলেন, পরীক্ষা থাকায় আমি সেদিন রুম পরিবর্তন করতে পারিনি। বিষয়টি হল কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। অথচ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন আল তামিমের নির্দেশে অভিতোষ ও তাহার নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিলেও বঙ্গবন্ধুর ছবি ছেঁড়ার মতো ঘৃণিত কাজ করেছে তারা। ছাত্রলীগের নেতা হয়ে আমার যদি নিরাপত্তা না থাকে, তবে এদের কাছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কীভাবে নিরাপদ?

আরও পড়ুন>> মধ্যরাতে ছাত্র হলে ‌ছাত্রলীগ নেত্রী

তিনি বলেন, শুক্রবার কলেজ বন্ধ থাকায় লিখিত অভিযোগ দিতে পারিনি। কলেজ খুললে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিব। তবে হল সুপার ও প্রিন্সিপাল স্যারকে খুদেবার্তায় বিষয়টি জানিয়েছি। আমি এর বিচার চাই, একইসঙ্গে হল ও ক্যাম্পাসে সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা চাই।

প্রত্যক্ষদর্শী হামিম, তানভীর ও তনিম বলেন, মধ্যরাতে ভাঙচুরের শব্দ শুনে এগিয়ে যাই। দেখি, অভিতোষ ও নাহিন্নবী তাহাসহ ৩০/৪০ জন রাহুলের রুমে ভাঙচুর করছে। রাহুলকে টেনে রুম থেকে বের করে দিচ্ছে। বের না হতে চাইলে ওকে মারধর করছে। আমরা বাধা দিলে আমাদের কয়েকজনের গায়েও হাত তুলেছে তারা। মধ্যরাতে হলে এমন হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। কলেজ প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি এ হামলার দৃষ্টান্ত শাস্তি হোক।

এ বিষয়ে জানতে পাবনা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক অভিতোষ চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি সরাসরি দেখা না করে কথা বলতে পারবেন না বলে ফোন রেখে দেন।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ আহমেদ বলেন, এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ওরা ব্যাচমেট (অভিতোষ ও রাহুল), যতটুকু জেনেছি একে অপরের সঙ্গে জাস্ট কথা কাটাকাটি হয়েছে। হামলা, ভাঙচুর বা মারধরের মতো কিছু ঘটেনি। এ ঘটনায় আমাদের সংশ্লিষ্টতাও নেই। তবে উভয়পক্ষই যেহেতু সংগঠনের, তাই কলেজ প্রশাসন ও সিনিয়র নেতাদের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করা হবে।

পাবনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. উবায়দুল্লাহ ইবনে আলী জানান, নতুন শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কাউকে হল বা রুম থেকে বের করে দিতে কোনো শিক্ষার্থী বা ছাত্রনেতাদের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। হল সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানে হল সুপাররা রয়েছেন। এখানে অন্য কারওর হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজে এক শিক্ষার্থী বিষয়টি জানিয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপন দেশ/আরএন/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়