ছবি: সংগৃহীত
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে রোববার (১২ মে)। ফল প্রকাশের পর দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে। কেউবা অকৃতকার্য ও প্রত্যাশিত রেজাল্ট না হওয়ায় আত্মহত্যা করেছে। প্রত্যাশিত রেজাল্ট না হওয়ায় সারাদেশে ৮ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। একই ঘটনায় আরও ৩ শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় নোয়াখালী, নীলফামারি, ঠাকুরগাঁও, ময়মনসিংহ, ঝিনাইদহ, গোপালগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মাগুরা জেলার ৮ শিক্ষাথী আত্মহত্যা করেছে।
প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদে জানা গেছে নোয়াখালীর সদর উপজেলায় পরীক্ষায় ফেল করায় এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। মৃত তানজিনা আক্তার ঝুমি (১৬) নোয়াখালী পৌরসভার সল্যা ঘটাইয়া গ্রামের মো. আব্দুল করিমের মেয়ে। সে স্থানীয় কালিতারা মুসলিম গার্লস একাডেমি থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। ওই দিন রাতে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নীলফামারীর সৈয়দপুরে রাফসান জানি এমিলের (১৬) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার বাঙালিপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাফসান ওই এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে। সে এ বছর স্থানীয় লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার আশা করেছিল সে। কিন্তু প্রকাশিত ফলাফলে জিপিএ ৪.৮৯ আসায় কান্নাকাটি করতে থাকে। একপর্যায়ে সে ঘরে গিয়ে গলায় ফাঁস দেয়।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় মিতু (১৫) নামের স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। এদিন দুপুরে নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দেয় সে। উপজেলার কামারপুকুর গ্রামের মুসা আলীর মেয়ে ও কামারপুকুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী মিতু।
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার সাবেক বিন্নী গ্রামে আত্মহত্যা করে নুপুর আকতার (১৬)। সে ওই গ্রামের আসাদুল ইসলামের মেয়ে। এবার উপজেলার দুর্লভপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করার খবর পেয়ে নুপুর মনমরা হয়ে পড়ে। পরে পরিবারের অগোচরে ঘরে ঢুকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে আত্মহত্যা করে শোহেদা আক্তার (১৭)। ফলাফল মেনে নিতে না পারায় নিজ ঘরে ফাঁসি দেয় সে। তার বাড়ি উপজেলার বতিহালা গ্রামে। এর আগে, ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয় সে। পুনরায় পরীক্ষা দিয়েও অকৃতকার্য হওয়ায় ভেঙে পড়ে।
গোপালগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষায় এক বিষয়ে ফেল করায় আত্মহত্যা করেছে প্রিন্স হাসান মাহাতী। ফল ঘোষণার পর দুপুরে জেলা শহরের মোহাম্মদ পাড়ায় বোন বৈশাখী বেগমের ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করে। মেরী গোপিনাথপুর খন্দকার শামসুদ্দিন স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী প্রিন্স মাহাতী।
হবিগঞ্জের বিষপানে আত্মহত্যা করেছে মাইশা আক্তার (১৭)। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় আরও দুই কিশোর বিষপান করেছে। তারা হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ফল প্রকাশের পর বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে তিন কিশোর-কিশোরী। পরে তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা। এর মধ্যে মাইশাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আর অপর দুই কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
মাগুরায় রিমপি কথা সাহা (১৬) নামের এক শিক্ষার্থী চতুর্থতলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছে। জেলা শহরে এক আত্মীয়ের বাসার ছাদ থেকে সে লাফা দেয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে, পরে ফরিদপুর মেডিকেলে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে মারা যায় সে। মাগুরার মহম্মদপুরের বিনোদপুর বালিকা বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় কথা সাহা। পরীক্ষার ফলাফলে জানা যায়, সে অংক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।