ফাইল ছবি
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় বাংলাদেশে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতি ৩০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন শিক্ষকের কথা বলা হলেও ছয় বছর আগেই সেই লক্ষ্য অর্জন করলো সরকার। এখন গড়ে ২৯ শিক্ষার্থীর বিপরীতে রয়েছে শিক্ষক একজন।তবে এটি গড় হিসাব হলেও এখনো অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণি কার্যক্রম।
২০১০ সালেও সরকারি প্রাথমিকে প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক ছিল মাত্র একজন।
এ অবস্থায় গত বছর ৩৭ হাজার ৫৭৪ জনকে নতুন করে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া চলমান ১৪ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াও শেষ হবে এ বছর জুনের মধ্যেই। এতে ছয় বছর আগেই এসডিজি'র লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে বাংলাদশে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, 'স্বাধীনতার পরে প্রাথমিক শিক্ষায় এটি সরকারের অনেক বড় অর্জন। আমরা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এটি প্রকাশ করবো। আমাদের জাতীয় কাগজপত্র ও অর্থ এসেছে। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের তথ্য অনুযায়ী প্রতি ২৯ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন জন করে শিক্ষক।'
শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনায় আগে যে বেগ পেতে হতো, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতিক ব্যবধান কমে আসায় তা এখন অনেক বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন <> ‘শরীফার গল্প’ নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির যেসব সুপারিশ
শিক্ষকরা বলেন, আমরা আগে সাময়িক সমস্যার মধ্যে পড়তাম। এখন আর আমাদের পাঠদানে কোনো সমস্যা হয় না। নতুন ভবনের সাথে নতুন শিক্ষা সরঞ্জামাদি পেয়েছি। বিদ্যালয়ের শিক্ষকের সংখ্যাও পর্যাপ্ত।
তবে আলাদা চিত্রও রয়েছে অনেক বিদ্যালয়ে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ৭৮০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক মাত্র ১৬ জন। অর্থাৎ প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক একন। এতে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনায় বেগ পেতে হয় শিক্ষকদের।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খাইরুন নাহার লিপি বলেন, 'শিক্ষক স্বল্পতার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমাদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়।'
বিশ্বের অনেক উন্নত দেশেই ১০ থেকে ১৫ শিক্ষার্থীর জন্য বরাদ্দ একজন শিক্ষক। শিক্ষাবিদরা বলছেন, ২০২৩ সাল থেকে যে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে, তা যথাযথ বাস্তবায়নে দেশের প্রাথমিক শিক্ষায় গড়ে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক হওয়া দরকার।
শিক্ষাবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'ফিনল্যান্ডের মতো ১৫ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে এক জন শিক্ষক দেয়ার মতো সামর্থ্য নেই। হয়তো নতুন করে একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে প্রতি ২০ জনে একজন করে। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করতে গেলে আমাদের এটি করতে হবে। সেইসঙ্গে শিক্ষকের মান আরও বাড়াতে পারলে শিক্ষার্থীরা লাভবান হবে।'
দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বছরে প্রায় ছয় হাজার শিক্ষক অবসরে যান। শূন্য পদ পূরণসহ নতুন পদ সৃষ্টি করে শিক্ষার্থীর অনুপাতে শিক্ষক আরও বাড়ানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।