ছবি: সংগৃহীত
কোটা বিরোধী আন্দোলনের ৫ দিন চলছে। আজ শনিবার বন্ধের দিনেও রাজপথে শিক্ষার্থীরা। ঢাকা, রাজশাহী, ময়মংসিংহসহ দেশের বিভন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছেন। শিক্ষকরা ফিরলেও কোনো ধরনের ক্লাস পরীক্ষায় না ফেরার ব্যাপারে একাত্মতা প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭০টি বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের কারণে দেশের বিভ্ন্নি সড়ক মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
আমাদের প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য-
রাজশাহী : সকাল ১০টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাবিব রেজা বলেন, চলমান কোটা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের আগামী কর্মসূচির সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ইতোমধ্যে একাত্মতা পোষণ করেছে। শিক্ষকেরা তাদের আন্দোলন শেষে ক্লাসে ফিরলেও কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সমাধান নাহলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে না।
এসময় তারা‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’—ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে প্রকম্পিত করে রাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
টাঙ্গাইল : ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ করে সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে মহাসড়কে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট সৃষ্টি ও যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
কুষ্টিয়া : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তৃতীয় দিনের আন্দোলনে বৃষ্টি উপেক্ষা করে আধাঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।
ঢাবির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী বোরহান উদ্দিন বলেন, আমরা কোটা পুনর্বহালের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি। সুযোগের সমতা নিশ্চিতে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা বাস্তব জীবনে তা প্রয়োগ করতে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিক্ষকরা তাদের আন্দোলন শেষ করে ক্লাসে ফিরলেও আগামী রবিবার ১৫ তম ব্যাচের কেউ ক্লাসে ফিরবে না। কোনো ক্লাস শিডিউল দেয়া হবে না। সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করা হলো।
ঢাকা : পঞ্চম দিনের মতো কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়ো হচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৬ জুন) দুপুর দুইটা থেকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী শিক্ষার্থী আব্দুল মমিন বলেন, পুরো দেশে চলমান শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আন্দোলন করে যাচ্ছে। আজ থেকে আবার নতুন কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ব্যাচগুলোর পক্ষ থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ডাক শুরু হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার ঘোষণা দিয়েছে তারা।
এ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস বর্জনকারী বিভাগ ও ইন্সটিটিউট সংখ্যা ৬৩টি। এর মাঝে ৪৭টি ব্যাচ ও ইন্সটিটিউটের সকল ব্যাচ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। বাকি ১৪ বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের কয়েকটি ব্যাচ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা করেন। তবে এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।