ছবি সংগৃহীত
মাধ্যমিকে বিভাগ (মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসা) তুলে দিয়ে শুধু দশম শ্রেণির সিলেবাসে হবে এসএসসি পরীক্ষা— এমন প্রস্তাব ছিল নতুন কারিকুলামে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তবর্তীকালীন সরকার সেই কারিকুলাম সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মাধ্যমিকে বিভাগ বাতিল হবে না। তবে দশম শ্রেণির সিলেবাসের ওপর পরীক্ষার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মোছাম্মদ রহিমা আক্তার স্বাক্ষরিত পরিপত্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
এতে বলা হয়, নতুন শিক্ষাক্রমে বিভাগ বিভাজন (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) নেই। ফলে নবম শ্রেণিতেও একই পাঠ্যবই পড়ছে সব শিক্ষার্থী। তবে তারা যখন দশম শ্রেণিতে উঠবে, তখন বিভাগ বিভাজনের সুযোগ পাবে। তারা আগের নিয়মে যেন ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে, সেজন্য সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিও প্রণয়ন করা হবে।
এছাড়া জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২-এর বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা তথা অংশীজনের অভিমত, গবেষণা ও জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়বস্তু ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অস্পষ্টতা ও নেতিবাচক ধারণা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার প্রকট অভাব ইত্যাদি বাস্তব সমস্যা রয়েছে। ফলে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এই পরিপ্রেক্ষিতেই এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো– প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে প্রাক-প্রাথমিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে ধারাবাহিকতা রেখে ইতোমধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবইগুলোর পাণ্ডুলিপি প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করে মুদ্রণ করা হবে; এ ক্ষেত্রে পাঠদান পদ্ধতি ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হবে।
২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা অব্যাহত রেখে আগের শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যবইগুলো (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত বই) শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হবে। আগের শিক্ষাক্রম অনুসারে প্রণীত বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখাভিত্তিক এই পাঠ্যবইগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই পাঠ্যসূচিটি সম্পন্ন করতে পারে। পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি আগের শিক্ষাক্রম অনুসারে পরিচালিত হবে।
যেসব শিক্ষার্থী ২০২৫ সালে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে, তাদের আগের শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত শাখা ও গুচ্ছভিত্তিক সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যবইগুলো (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত) দেওয়া হবে। এসব শিক্ষার্থী নবম ও দশম শ্রেণি মিলে দুই শিক্ষাবর্ষে সম্পূর্ণ পাঠ্যসূচি শেষে ২০২৭ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। শিক্ষাবিদ, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ, প্যাডাগগ, মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রশাসক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করা হবে, যা ২০২৬ সাল থেকে পরিপূর্ণরূপে কার্যকর করা হবে।
আপন দেশ/মাসুম
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।