ফাইল ছবি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা বহুনির্বাচনী ও শূন্যস্থান পূরণের মাধ্যমে নেয়া হয়েছে। যদিও অতীতে শিক্ষক নিয়োগে এমন পদ্ধতি দেখেননি বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (০১ জানুয়ারি) পর্যন্ত তিনটি বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা হয়। যেখানে দুটিতে শুধু এমসিকিউ, একটিতে ২০ নম্বরের এমসিকিউ ও ৫ নম্বরের শূন্যস্থান পূরণ প্রশ্নোত্তর থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গত ২৩ অক্টোবর রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যায়। সেখানে ৮ বিভাগের বিপরীতে মোট ১৬ জন প্রভাষক নিয়োগের বিষয় উল্লেখ আছে।
এর মধ্যে পদার্থবিজ্ঞানে ২ জন, রসায়নে ২ জন, পরিসংখ্যানে ১ জন, ইংরেজিতে ২ জন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় ২ জন, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩ জন, ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজিতে ৩ জন এবং ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগে ১ জন প্রভাষক নিয়োগের বিষয় উল্লেখ রয়েছে।
ইতোমধ্যে গত ৩০ ডিসেম্বর ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগে ৩ জন প্রভাষক নিয়োগের জন্য ডাকা হয় প্রার্থীদের। সেখানে ২৫ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা হয়েছে। এছাড়া ৩১ ডিসেম্বর কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৩ জন প্রভাষক নিয়োগের পরীক্ষাও একই পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে বুধবার (০১ জানুয়ারি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২ জন প্রভাষক পদে নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে ২০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৫ নম্বরের শূন্যস্থান পূরণের প্রশ্ন দেয়া হয়েছে পরীক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. দুলাল চক্রবর্ত্তীকে একাধিক মুঠোফোনে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মাহমুদুল হাছান বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া কনফিডেনসিয়াল তাই কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. সজল চন্দ্র মজুমদার বলেন, যেহেতু প্রশ্নের সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম না তাই এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করবো না।
প্রকৌশল অনুষদের ডিন ড. মো. সাইফুর রহমানও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন<<>> সমালোচনায় যোগদান হয়নি রাবির দুই সহকারী প্রক্টরের
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. প্রদীপ দেবনাথ বলেন, এমসিকিউ ও শূন্যস্থান পূরণ উভয় পদ্ধতির প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এখানে সিলেকশন বোর্ডে সাবজেক্ট এক্সপার্ট যারা আছেন, উনারাই প্রশ্নপত্র করেছেন। এখানে ডিন হিসেবে আর কিছু বলার নেই আমার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, সিলেকশন বোর্ড স্বচ্ছতার স্বার্থে লিখিতটাকে এমসকিউ এ কনভার্ট করেছে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কোনো বিভাগে প্রভাষক নিয়োগের জন্য- প্রয়োজনে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে শর্টলিস্ট করে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে।
লিখিত পরীক্ষা হিসেবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া যায় কিনা? এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ইউজিসির যে নীতিমালা রয়েছে সেটি নীতিমালা নয়, দিকনির্দেশনা। তবে, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এমসিকিউ পরীক্ষা নেয়াটা অকোয়ার্ড (বিব্রতকর) লাগে, হাস্যকর মনে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, লিখিত আর এমসিকিউ একই। লিখিত মানে প্রার্থীকে খাতায় লিখতে দেয়া। খাতায় লিখতে পারলেই সেটি লিখিত। আমরা সাধারণত যাচাই করার জন্যই খুব হাই কোয়ালিটির প্রশ্ন করে থাকি এবং পাস নম্বর নির্ধারণ করে থাকি। সেই পাস নম্বর কেউ পেলে তাকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। লিখিত পরীক্ষাটি শুধু সংখ্যা কমানোর জন্য নেয়া হয়।
আপন দেশ/এসএমএস/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।