ছবি: আপন দেশ
৩ দফা দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছেন। এসময় অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন দুই উপ-উপাচার্য। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ভবনে তালা ঝুলিয়ে রাখবেন। কাউকে ভবনে প্রবেশ বা বের হতে দেয়া হবে না।
বুধবার (২ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় এ বিক্ষোভ শুরু হয়। তাদের দাবি হলো- পোষ্য কোটা বাতিল, জুলাই বিপ্লববিরোধী শিক্ষক-কর্মচারীদের শাস্তি, আওয়ামীলীগের দোসর দুই শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর হিসাবে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ এনে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে গণক্ষমা চাইতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, এ প্রশাসনকে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাঁবেদারি করার জন্য নিয়োগ করা হয়নি। নিয়োগ করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন করার জন্য। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি যদি আপনার কাছে অন্যায় আবদার মনে হয় তাহলে আপনি বড় ফ্যাসিস্ট। শুধু আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট নয় অযৌক্তিক বিষয় যারা যৌক্তিক করার জন্য ভেতরে লড়াই করছেন আপনারাই বড় ফ্যাসিস্ট। আপনারা আমাদের ষড়যন্ত্রকারী বলছেন আমরা বলছি ভিসি, প্রো-ভিসিসহ প্রশাসনিক ভবনের সকলেই আপনারা ফ্যাসিস্টের দালাল।
এখন আপনারা হয় পোষ্য কোটা বাতিল, আওয়ামী লীগের দোসরদের খুঁজে বের করে মামলা করবেন, ফ্যাসিস্টের দোসরদের নিয়োগ দেয়ায় রেজিস্ট্রার, ভিসি এখানে সকলের সামনে গণ ক্ষমা চাইবেন নতুবা শীতকালীন ছুটি যাবে, গরমকালীন ছুটি যাবে তবুও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলবে।
অবরুদ্ধ অবস্থায় রাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, তাপসী রাবেয়া হলের একজন নারী কর্মকর্তা দাফতরিক কাজে প্রশাসনিক ভবনে এসে আটকে গেছেন। খবর এসেছে তার বৃদ্ধা মা সংকটাপন্ন অবস্থায়। তাকে বের হতে দেয়া হচ্ছেনা। একজন ডায়াবেটিক রোগীর খাবার ঢুকতে দেয়নি। আমি সালাহউদ্দিন আম্মারকে উক্ত কর্মকর্তাকে বের হতে দেবার অনুরোধ করলে সে বের হতে দিবে না বলে ফোন রেখে দিয়েছে। আমি এ ধরনের অমানবিক আচরণ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যের নাগরিক অধিকার খর্ব করে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
এ বিষয়ে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, আমরা সার্বিক বিচার বিশ্লেষণ করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সাধারণ কর্মচারীদের জন্য ১ শতাংশ কোটা রেখেছি। আসলে আপনারা যদি খোঁজ নেন দেখতে পাবেন তাদের জন্য এটা রাখা যৌক্তিক। তাদের অবস্থা ভালো হয়ে গেলে আগামীতে এটাও বাতিল করা হতে পারে। তবে এ বছর ১ শতাংশ বহাল থাকবে।
আওয়ামী লীগের দোসর শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া শাস্তি দেওয়ার অধিকার আমাদের নেই। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে অবশ্যই আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
এছাড়া আওয়ামী লীগের দুই শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর নিয়োগের ক্ষেত্রে তথ্যগত ত্রুটি ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না সে বিষয়ে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে বলেন জানান উপাচার্য।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।