আবাসন সংকট নিরসনে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন নারী শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রথম বর্ষে ভর্তিকৃত আবাসনবঞ্চিত নারী শিক্ষার্থীরা তাদের আবাসনসংক্রান্ত ৭ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে। তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা প্রতীকী অনশনও পালন করছেন। সোমবার (০৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে তারা এ অবস্থান শুরু করেন।
এর আগে ৫ জানুয়ারি বিকেলে ঢাবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শামসুন নাহার হলের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমু।
তিনি বলেন, গত ২৯ ডিসেম্বর নারী শিক্ষার্থীরা শতভাগ আবাসিকীকরণের দাবিতে উপাচার্য মহোদয়ের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করি। কিন্তু স্মারকলিপিতে উল্লেখিত অধিকাংশ দাবি পূরণ করতেই প্রশাসন এক প্রকার অপারগতা প্রকাশ করে। পরে কোষাধ্যক্ষ মহোদয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি মেয়েদের হলে সিট স্বল্পতা ও গৃহীত মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
তিনি আরও বলেন, কোষাধ্যক্ষ মহোদয় আমাদের আশ্বস্ত করেন মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় আগামী তিন বছরের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন হল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু নতুন হল স্থাপনের আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সিট সংকট সমাধানের কোনো অস্থায়ী ব্যবস্থা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া সম্ভব নয় বলে তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন। শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা নিলেও প্রশাসন আবাসিকীকরণের দায়িত্ব নিতে অনিচ্ছুক। উপরন্তু স্কলারশিপের অর্থ সহায়তা কবে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছবে সে সম্পর্কেও আমরা কোন সদুত্তর পাইনি।
অস্থায়ী আবাসন ও পরবর্তীতে মূল ক্যাম্পাসের ভেতরে নারীদের স্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে জানিয়ে ইমু বলেন, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে উচ্চশিক্ষার জন্য আগত প্রথম বর্ষের নারী শিক্ষার্থীরা আবাসনের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ক্যাম্পাসের বাইরে অনিরাপদ পরিবেশে বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছে। এ বাস্তবতা উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া রীতিমত প্রহসনের শামিল। কাজেই নারী শিক্ষার্থীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা ও অন্যান্য দাবি আদায় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নারীবান্ধব করে তোলার আগ পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।'
স্মারকলিপিতে উল্লিখিত তাদের ৭ টি দাবি হলো-
১. প্রথম বর্ষের নারী শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করতে কার্যকর উদ্যোগ।
২. অমানবিক ও অস্বাস্থ্যকর গণরুম অবিলম্বে বিলুপ্তি ও পর্যাপ্ত আসন নিশ্চিত।
৩. অস্থায়ী আবাসনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন ভবন বা ভাড়া নেয়া ভবন ব্যবহারের দ্রুত ব্যবস্থা।
৪. মূল ক্যাম্পাসেই নতুন ছাত্রী হল নির্মাণ ও দ্রুত এর দৃশ্যমান কাজ শুরু।
৫. অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশ ও ডাইনিংসহ অন্যান্য সুবিধা গ্রহণের অনুমতি।
৬. ডাবলিং পদ্ধতি পর্যায়ক্রমে তুলে দিয়ে পর্যাপ্ত আবাসন নিশ্চিত।
৭. মৈত্রী ও বঙ্গমাতা হলকে ধারাবাহিকভাবে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর।
এসময় শিক্ষার্থীরা এসব দাবিদাওয়া পূরণের জন্য ডাকসু নির্বাচন জরুরি বলেও মন্তব্য করেন। তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া উপস্থাপনের একটি জায়গা হলো ডাকসু। অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার মাধ্যমে সে জায়গাটি তৈরি করে দিতে হবে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।