
ড. আলী রিয়াজ
অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান প্রফেসর ড. আলী রিয়াজ বলেছেন, বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ ধরে কাঠামোগতভাবে যে বৈষম্য তৈরি হয়েছে, তা শুধু প্রাণের বিনিময়ে দূর হবে এমনটা ভাবার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে বিশ্বজুড়ে অনেক অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন, বাংলাদেশ টিকবে না। তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হবে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ প্রমাণ করেছে তারা পারে। বাংলাদেশ অগ্রসর হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. আলী রিয়াজ।
সবাই দায়িত্ববোধ আর জ্ঞান দিয়ে, আচরণ দিয়ে একটু একটু করে সেই বৈষম্য কমানো সম্ভব মন্তব্য করে তিনি বলেন, অর্জনের প্রথম কাজ হলো পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতাবোধ তৈরী করা। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশের মানুষ নিজ কর্মউদ্যোগে অনেককিছুই অর্জন করেছে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, তরুণরাই হচ্ছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তাই তরুণদের প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা, ভিন্নমতদের প্রতি সহমর্মিতাবোধ তৈরি। সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের প্রাপ্য সুবিধা নিশ্চিত করা, সবাইকে সমতার জায়গায় নেয়ার চেষ্টা থাকলে সাফল্য অর্জিত হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ড. আলী রিয়াজ বলেন, গত ৫৪ বছর ধরে মানুষ নিজ উদ্যোগে অনেক কিছু অর্জন করার ফলে সমাজ এগিয়েছে। ২০২৪ বলে দিচ্ছে আপনারা পারেন। এ কমিটমেন্ট ধরে রাখতে হবে। যে বীর শহীদরা নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন, তাদের মেধা, পরিশ্রম, আন্তরিকতা, সহযোগিতা ও আন্দোলনের ফসল নতুন বাংলাদেশ।
আমি অনুভব করি এটার প্রয়োজন ছিল। তাদের অবদান আপনি যদি না স্বীকার করেন তাহলে সেটা ব্যক্তির উদযাপন হবে। কোথাও অন্যায় হলে কণ্ঠস্বর স্পষ্ট হওয়া উচিত। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হওয়া দরকার। ছোট অন্যায্য একদিন বড় হয়ে যায়। অন্যায্য সমাজকে ধ্বংস করে দেয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকুন। সৃষ্টিশীল মানুষ সম্পদশালী হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ ও জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে নিহত শহীদদের জন্য দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে নিহত শহিদ ও আহতদের জন্য দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ড. এস এম আব্দুল আওয়াল। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আনোয়ারুল আজিম আকন্দ, কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নকীব মুহাম্মদ নাসরুল্লাহ, রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক।
এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মো. নজরুল ইসলাম। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শামীম আহসান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা দফতরের পরিচালক, হল প্রভোস্ট ও নবাগত শিক্ষার্থীরা।
সভার শুরুতে অতিথিদের ক্রেস্ট উপহার দেন রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক হুমায়ন কবির ও সায়মুন্নাহার রিতু।
আপন দেশ/এমএস
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।