
মোছা. আঞ্জুমান আরা স্বর্ণালী : আপন দেশ
আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রধান লক্ষ্য থাকে জুডিশিয়ারি। মোছা. আঞ্জুমান আরা স্বর্ণালীর ক্ষেত্রেও তার বিকল্প নয়। কিন্তু কেমন ছিল তার বিজেএস যাত্রা, কীভাবে সে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে এবং এ যাত্রায় পর্দার আড়ালে কারো সমর্থন ছিল কিনা এসব নানা বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন আপন দেশের প্রতিনিধি নুরুল হাকিম বাপ্পি।
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হয়জুডি স্বর্ণালী। আইন বিভাগে পড়ার সুবাদে বিচার বিভাগের প্রতি তার স্বপ্ন জাগে। স্বপ্নজয়ের লক্ষ্যে সে তৃতীয় বর্ষ থেকে জুডিশিয়ারির প্রস্তুতি শুরু করে। অনার্স শেষ হওয়ার পরপরই সে ১৬তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। কিন্তু ভাগ্য তার সহায় হয়নি সেবার। ভাইভা দিয়েও সুপারিশ প্রাপ্ত হয়নি। তবে সে হাল ছেড়ে দেয়নি। স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখার তীব্র ইচ্ছাশক্তি নিয়ে আবারো প্রস্তুতি শুরু করে স্বর্ণালী। ফলশ্রুতিতে সদ্য প্রকাশিত ১৭তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষায় ৫৫তম মেধাক্রমে সুপারিশপ্রাপ্ত হয় সে।
স্বর্ণালীর কাছে বিজেএস যাত্রা কেমন ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবারের বিজেএস যাত্রা আমার জন্য মোটেও সহজ ছিল না৷ আমার যখন লিখিত পরীক্ষা চলতেছিল তখন আমার বাবা ছিল আইসিইউতে। বাবাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রেখে আমি লিখিত পরীক্ষা দিয়েছি। আমার ভাই বিদেশে থাকায় এবং পরিবারে আর কোনো পুরুষ সদস্য না থাকায় পরিবারের দেখাশুনার দায়িত্বও আমার উপর ছিল। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমার রেজাল্টের আগেই আমার বাবা এ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে গেছে।
সহকারী জজ হতে হলে অ্যাকাডেমিক রেজাল্ট কতটুকু ফলপ্রসূ জানতে চাইলে তিনি জানান, যদিও জুডিশিয়ারির ক্ষেত্রে রেজাল্ট তেমন ম্যাটার করে না তবে রেজাল্ট যার ভালো তার তো জুডিশিয়ারির প্রিপারেশনও ভালো থাকে। রেজাল্ট খারাপ বলে যে জুডিশিয়ারি হয় না, তেমন নয়।
সফলতার অনুপ্রেরণা কী ছিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানুষ কখনো একা সফল হতে পারে না। আমি আমার আশেপাশের মানুষের কাছে যথেষ্ট সাপোর্ট পেয়েছি। আজকে এ পর্যন্ত আসার পেছনে আমার বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি এবং হাসবেন্ডের অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও আমার বিভাগে সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ এবং আমার সহপাঠীরা আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে।
নবীন যারা প্রস্তুতি নিবে তাদের করণীয় কি তা জানতে চাইলে স্বর্ণালী বলেন, জুডিশিয়ারি হচ্ছে ধৈর্যের খেলা। দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্তুতি নিতে হয় এখানে। নবীনদের উদ্দেশ্যে আমার পরামর্শ থাকবে তারা যাতে ধৈর্য ধরে পড়াশোনা করে। পড়াশোনা করার ক্ষেত্রে রিগুলারিটি মেন্টেইন করা খুবই জরুরী। যেমন- একদিন আমি ১২-১৩ ঘন্টা পড়লাম পরেরদিন কিছুই পড়লাম না এমন যাতে না হয়।
বিচার বিভাগে গিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করতে চায় স্বর্ণালী। স্বর্ণালী জানান, আমার নিজের অনেক পরিচিত জনকে দেখেছি এক মামলা বছরের পর বছর চালাতে। আমি এ জায়গায় কাজ করতে চাই। মামলার দীর্ঘসূত্রিতা কমানোর জন্য কাজ করবো ইনশাআল্লাহ!
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।