
ফয়সাল আহম্মেদ নিম্ন-মধ্যবিত্তদের জন্য স্বল্পমূল্যে খেজুর বিক্রি করছেন।
রমজানে মুসলিম দেশগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নাগালের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হয়। তবে বাংলাদেশে বাজার পরিস্থিতি ভিন্ন। বিশেষ করে খেজুরের দাম প্রতিবছরই অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। সরকার আমদানি শুল্ক কমালেও বাজারে খেজুরের দাম সে অনুপাতে কমেনি।
এ অবস্থায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহম্মেদ সাধারণ শিক্ষার্থী ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য স্বল্পমূল্যে খেজুর বিক্রির উদ্যোগ গ্রহণ করেন ।
রাজনীতির মাঠে যখন ছাত্রদলের অনেক নেতাকর্মী মিছিল-মিটিং ও অন্য কাজে ব্যস্ত, তখন ফয়সাল আহম্মেদ ব্যতিক্রমী পথ বেছে নিয়েছেন। কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ও ১৭-১৮ সেশনের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল রমজানজুড়ে কলেজ গেটের সামনে ভ্রাম্যমাণ দোকানে সুলভ মূল্যে খেজুর বিক্রি করছেন।
প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে এ বিক্রি। এখানে আজওয়া, মাবরুম, সুক্কারি, মরিয়ম, কালমি, মাসরুখ, সুগাই, জিহাদিসহ প্রায় ১৫ প্রকারের খেজুর পাওয়া যায়। বাজার মূল্যের চেয়ে ২০০-৩০০ টাকা কম দামে খেজুর বিক্রি করছেন তিনি। শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ ২০ টাকা থেকে শুরু করে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী খেজুর কিনতে পারছেন।
আরও পড়ুন>>>ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে জাবিতে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’
কলেজের শিক্ষার্থী আলামিন মিয়া বলেন, এর আগে কোনো রাজনৈতিক নেতাকে এমন উদ্যোগ নিতে দেখিনি। আমি প্রতিদিনই এখানে ৪০-৫০ টাকার খেজুর কিনি। ফয়সাল ভাই হাসিমুখে বলেন—১০ টাকারও লাগলে বলবা, লজ্জা পেয়ো না। তোমরা যেন সহজে খেজুর কিনতে পারো, তাই এ দোকান দিয়েছি। উনার এ উদ্যোগ শুধু ছাত্রদলের জন্য নয়, সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের জন্যই অনুকরণীয়।
ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, রমজানে খেজুরের চাহিদা বাড়ে, দামও অনেক বেশি থাকে। আমি চেয়েছি স্বল্প আয়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য করতে।
তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে ব্যাচেলর শিক্ষার্থীরা ২০-৫০ টাকার খেজুরও লজ্জায় কিনতে পারে না। আমি তাদের ভাই হিসেবে পাশে থাকতে চেয়েছি। যাতে নির্দ্বিধায় তারা কিনতে পারে। আমি প্রথম থেকে তাদের থেকে খুবই ভালো সাড়া পাচ্ছি, তার পাশাপাশি সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকেও।
রাজনীতি নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি জানিয়ে ফয়সাল বলেন, আমি সুশৃঙ্খল রাজনীতি পছন্দ করি। পড়াশোনার পাশাপাশি আমি মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। লাভ কম হলেও সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে—শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে খেজুর কিনতে পারছে। এটাই আমার ব্যবসা সবচেয়ে বড় সফলতা।
ফয়সালের এ উদ্যোগ সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কলেজের অনেক শিক্ষক ও অভিভাবকের প্রশংসা কুড়িয়েছে। রাজনীতির বাইরে মানবসেবায় তার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।