Apan Desh | আপন দেশ

খুশি মাদরাসা শিক্ষকরা: ঈদ আনন্দ নেই স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:১২, ২৬ মার্চ ২০২৫

খুশি মাদরাসা শিক্ষকরা: ঈদ আনন্দ নেই স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের

ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে চলতি মাসের (মার্চ) বেতন ও ভাতা পেয়ে মহাখুশি বেসরকারি মাদরাসার এমপিওভুক্ত মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারিরা। তবে বিপরীত চিত্র এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে। চলতি মাসের বেতন তো দূরের কথা, তারা এখনো ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনও পাননি। এমনকি অনেক শিক্ষক-কর্মচারি জানুয়ারি মাসের বেতনও এখনো পাননি। ফলে স্কুল-কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য এবার হতাশার ঈদ।

জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিদের বেতনের এমপিওর অংশ অ্যানালগ পদ্ধতিতে ছাড় করতো মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) ও মাদরাসা অধিদফতর। তবে গত ১ জানুয়ারি থেকে মাউশির অধীনে স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের বেতন দেয়া হচ্ছে ইএফটির মাধ্যমে। এতে দেখা দিয়েছে জটিলতা। ভোগান্তি কমাতে ইএফটি চালু করা হলেও তা উল্টো গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে মাদরাসা অধিদফতর এখনো মাদরাসা শিক্ষকদের অ্যানালগ পদ্ধতিতে বেতন-ভাতা ছাড় করছে। ফলে তারা ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন অনেক আগেই পরিশোধ করেছে। এখন সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) চলতি মার্চ মাসের বেতনও ছাড় করেছে। ফলে মাদরাসা শিক্ষকরা বৃহষ্পতিবার ( ২৭ মার্চ) শেষ কর্মদিবসে ব্যাংক থেকে বেতন-ভাতার টাকা তুলতে পারছেন।

অন্যদিকে মাউশি সূত্র জানিয়েছে, স্কুল-কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিরা এখনো ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনও পাননি। আর মার্চ মাসের বেতন ঈদের আগে দেয়া সম্ভবই নয়।

মাউশির কর্মকর্তারা জানান, স্কুল-কলেজের তিন লাখ ৬৪ হাজার শিক্ষক-কর্মচারির ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনের জিও জারি হয়েছে। তবে আইবাস ডাবল প্লাস সফটওয়্যারে টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে এখনো ব্যাংকে টাকা পাঠানো সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) হয়তো ব্যাংকে টাকা যেতে পারে।

এদিকে, ঈদের আগে বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবস। শিক্ষকরা বলছেন, অনেক সময় ব্যাংকে টাকা যেতে রাতও হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার ব্যাংকে টাকা ঢুকলেও তারা ঈদের আগে বেতন-বোনাসের টাকা তুলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে হতাশ দেশের প্রায় ৫ লাখ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারি।

এমপিওভুক্ত এসব শিক্ষক-কর্মচারিরা বলছেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মার্চ মাসের বেতনও পেয়েছেন। বেসরকারি এমপিওভুক্ত মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারিদের মার্চের বেতনও ছাড় হয়েছে। অথচ মাউশির কর্মকর্তাদের অবহেলায় স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। এর দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।

আরওপড়ুন<<>>গেটের তালা ভেঙে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন মুক্তিযোদ্ধারা

বাংলাদেশ শিক্ষক ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রভাষক মো. সান্ত আলী বলেন, কয়েক লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-বোনাস দিতে মাউশি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা শিক্ষক-সমাজকে চরমভাবে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ করেছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বিভিন্ন বিষয়ে সবসময় মাউশি গা-ছাড়া ভাব দেখিয়ে এসেছে। শিক্ষকরা যদি সরকারের আওতাভুক্ত হয়ে থাকে, তাহলে সরকারের ঘোষণা সত্ত্বেও ২৩ মার্চের মধ্যে বেতন-বোনাস দেয়া হলো না কেন?

তিনি বলেন, শিক্ষকের ঈদ আনন্দ তো ম্লান হয়ে গেছেই। তারচেয়েও বড় বিষয় সমাজ ও পরিবারের কাছে লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছি না আমরা। তরুণ শিক্ষকরা এ বৈষম্য ও অবহেলা সহ্য করবে না। আমরা প্রয়োজনে মাউশি ঘেরাও কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

জানতে চাইলে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খান বলেন, চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন অনলাইনে দেয়া খুব সহজ বিষয় না। অনেকের তথ্যগত ভুল রয়েছে। তবুও মানবিক বিবেচনায় তাদের বেতন দেয়া হচ্ছে।

ইএফটির জটিলতা কেন কাটছে না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নতুন একটি বিষয় বাস্তবায়ন করতে নানা সমস্যা হয়। সব সমস্যা সমাধান করে বেতন দেয়ার কাজ চলছে। আমরা আমাদের কাজ শেষ করেছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদনও দিয়েছে। বাকি কাজ অর্থ মন্ত্রণালয় ও ব্যাংকের। তাদের বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বক্তব্য দিতে পারি না। কবে ব্যাংকে টাকা পাঠানো হবে, সেটি চিফ অ্যাকাউন্টস অফিস ভালো বলতে পারবে।

আপন দেশ/এমএস

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়